গাজা যুদ্ধ অবসানে ঐতিহাসিক শান্তি প্রস্তাব, ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর যুগল ঘোষণা

ওয়াশিংটন: মধ্যপ্রাচ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েল। সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত গাজা শান্তি পরিকল্পনা। একই…

Hollywood vs. The World? Trump Threatens 100% Tariff on Foreign Movies

ওয়াশিংটন: মধ্যপ্রাচ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েল। সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত গাজা শান্তি পরিকল্পনা। একই দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইজরায়েলের (Trump and Netanyahu) প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

Advertisements

প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাসের হাতে থাকা সমস্ত জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্ত করতে হবে, ইজরায়েল গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে, হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে এবং একটি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক কমিটি গঠন করা হবে। এর পাশাপাশি, গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যও একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা করা হয়েছে।

   

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “এই শান্তি পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হল যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ করা, সমস্ত জিম্মিকে ঘরে ফেরানো এবং এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে ইজরায়েল নিরাপদ থাকবে এবং ফিলিস্তিন উন্নতির পথে এগোবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানাই এই পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য এবং বিশ্বাস করার জন্য যে, আমরা একসঙ্গে কাজ করলে বহু বছরের রক্তপাতের অবসান ঘটাতে পারব।”

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে ইজরায়েল ও গাজার মধ্যে চলা যুদ্ধ এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৬,০০০ ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। আন্তর্জাতিক চাপ এবং মানবিক বিপর্যয়ের মুখে এই শান্তি পরিকল্পনাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হামাসের হাতে থাকা সমস্ত জিম্মিকে মুক্ত করতে হবে এবং ইজরায়েল ধাপে ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। এছাড়াও, একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে, যা ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত হবে।

ট্রাম্প সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “যদি হামাস এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে ইজরায়েলকে হামাস ধ্বংস করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ সমর্থন দেবে। আমি আশাবাদী যে, তারা এই প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেবে।”

নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমাদের সমস্ত জিম্মি — জীবিত ও মৃত — অবিলম্বে দেশে ফিরে আসবে। হামাস নিরস্ত্র হবে, গাজা হবে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ। ইজরায়েল নিরাপত্তার দায়িত্ব বজায় রাখবে। গাজার প্রশাসন হবে এমন এক শান্তিপূর্ণ বেসামরিক প্রশাসন, যা না হামাস পরিচালনা করবে, না বর্তমান ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।”

অন্যদিকে, হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাভি জানিয়েছেন, তারা এখনও হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে কোনও লিখিত শান্তি প্রস্তাব পাননি। আল জাজিরার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা এখনও কোনও লিখিত নথি পাইনি। পেলে আমরা আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাব।”

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই প্রস্তাব কার্যকর হয়, তবে এটি শুধু গাজার যুদ্ধের অবসানই ঘটাবে না, বরং ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দীর্ঘ ইতিহাসে শান্তির এক নতুন অধ্যায় সূচিত করবে।