ওয়াশিংটন: জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মাস কয়েক পর, কড়া পদক্ষেপ নিল আমেরিকা। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার ঘনিষ্ঠ শাখা The Resistance Front (TRF)-কে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন (Foreign Terrorist Organisation – FTO) এবং বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী (SDGT) হিসেবে ঘোষণা করল মার্কিন প্রশাসন (TRF Terrorist Designation)।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “আজ আমরা TRF-কে FTO ও SDGT হিসেবে তালিকাভুক্ত করছি। পহেলগাঁও হামলায় নিহত নিরীহ নাগরিকদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং সন্ত্রাস দমনে আমেরিকার অঙ্গীকার বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।”
কী ঘটেছিল পহেলগাঁও-এ?
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ বৈসরন উপত্যকায় চারজন অস্ত্রধারী জঙ্গি হিন্দু পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর নির্বিচারে গুলি চালায়। প্রাণ হারান ২৬ জন সাধারণ মানুষ। এই নৃশংস হামলার দায় প্রথমে TRF স্বীকার করলেও, কয়েকদিনের মধ্যে তারা বিবৃতি প্রত্যাহার করে নেয়।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ একে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পর ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ নাগরিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’: ভারতের জবাব
পহেলগাম হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত চালায় ‘অপারেশন সিন্দূর’। ৭ মে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয় নিশানা-ভিত্তিক এয়ারস্ট্রাইক। এই অভিযানে পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি অঞ্চলের নূর খান এয়ারবেসসহ একাধিক সামরিক স্থাপনায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জবাবে পাকিস্তান একাধিকবার নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গোলাগুলি চালায়।
যুদ্ধবিরতি, কিন্তু মধ্যস্থতায় নয়াদিল্লি অনমনীয়
ঘটনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প Truth Social-এ যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেন। তবে ভারত তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়, যুদ্ধবিরতি কোনও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ নয়, এটি দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনা ও সমঝোতার ফল। নয়াদিল্লির অবস্থান স্পষ্ট, ভারত-পাক সম্পর্কের কোনও বিষয়েই বাইরের কোনও মধ্যস্থতা মানা হবে না।
পরবর্তীতে পাকিস্তানের সেনা দফতরের ডিজিএমও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রস্তাব দেয়। ১০ মে, দুই পক্ষের সম্মতিতে সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হয়।