ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত ৬৩

পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় ফের ঘটল ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা (Road Accident)। বুধবার ভোররাতে পশ্চিম উগান্ডার এক ব্যস্ত মহাসড়কে দুটি যাত্রীবাহী বাস ও আরও দুটি গাড়ির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬৩ জনের। ঘটনায় আহত হয়েছেন বহু মানুষ, যাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

Advertisements

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাটি ঘটে গুলু শহরে যাওয়ার পথে এক হাইওয়েতে। দুটি বাস বিপরীত দিক থেকে আসছিল এবং উভয় চালকই একসঙ্গে ওভারটেক করার চেষ্টা করছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তেই মুখোমুখি ধাক্কা লাগে দুটি বাসের। সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঘটনাস্থলেই বহু যাত্রীর মৃত্যু হয়।

স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। বাস দু’টি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার মূল কারণ হলো বিপজ্জনক ওভারটেকিং ও অতিরিক্ত গতি। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং মৃতদের দেহ শনাক্ত করার কাজ চলছে।

পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “চালকদের মধ্যে কেউই ওভারটেক করার সময় নিরাপত্তার নিয়ম মানেননি। এর ফলেই ভয়াবহ এই মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। আমরা সকল চালককে সতর্ক করছি, যেন তারা এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ থেকে বিরত থাকেন।”

উগান্ডা ও পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য দেশে সড়ক দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। দেশের পুলিশ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে উগান্ডায় মোট ৫,১৪৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, যা ২০২৩ সালের তুলনায় অনেক বেশি। আগের বছর ওই সংখ্যা ছিল ৪,৮০৬। ২০২২ সালে নিহতের সংখ্যা ছিল ৪,৫৩৪। এই ক্রমবর্ধমান দুর্ঘটনার হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

পুলিশের সর্বশেষ অপরাধ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের দুর্ঘটনাগুলির প্রায় ৪৪.৫ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল অসতর্ক ওভারটেকিং ও অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো।

Advertisements

পশ্চিম উগান্ডার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই হাইওয়েতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে, কারণ রাস্তা সংকীর্ণ এবং রাতের অন্ধকারে দৃশ্যমানতা কম থাকে। অনেক সময় চালকরা ক্লান্ত অবস্থায় গাড়ি চালান, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ধাক্কা এত জোরে লেগেছিল যে বাসের সামনের অংশ সম্পূর্ণ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। বহু যাত্রী বাসের ভেতরেই আটকে গিয়েছিলেন।”

দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। সরকার নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছে এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছে। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে হাইওয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে এবং দ্রুত গতি সীমা নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।