টরন্টো: কানাডার টরন্টো শহরের মালটন গুরুদোয়ারায় সম্প্রতি এক খালিস্তানি সমর্থকদের মিছিলে প্রকাশ্যে ভারতবিরোধী ও হিন্দুবিদ্বেষী বার্তা ছড়ানো হয়েছে। এই মিছিলে একটি ট্রাকের উপর “জেল”-এর আদলে তৈরি কাঠামোর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের কুশপুত্তলিকা বসানো হয়। মিছিল থেকে প্রায় ৮ লক্ষ হিন্দুকে “ভারতে ফেরত পাঠানোর” দাবিও তোলা হয়। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র এক ধরনের রাজনৈতিক মতবিরোধ নয়, বরং একটি গোটা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণার প্রকাশ — যা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে উদ্বেগজনক।
তাৎপর্য ও উদ্বেগের কারণ
১. সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও প্রবাসে নিরাপত্তা হুমকি
খালিস্তানি আন্দোলন ঐতিহাসিকভাবে ভারত থেকে পঞ্জাব বিচ্ছিন্ন করার দাবিতে গঠিত হলেও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো স্পষ্টভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষে পরিণত হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ বা বহিষ্কারের দাবি প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।
২. সন্ত্রাসের অতীত ও বর্তমান রূপ
খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ১৯৮৫ সালে এয়ার ইন্ডিয়া ‘কনিষ্কা’ ফ্লাইট বোমা হামলার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়। আজকের মিছিল সেই একই মতাদর্শের আধুনিক রূপ বহন করছে বলে অনেক বিশ্লেষকের মত।
কানাডার রাজনৈতিক নীরবতা ও দ্বৈতনীতি Toronto Khalistan Rally Hate Speech
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি নির্বাচনে জয় লাভ করলেও এই ধরনের মিছিল ঠেকাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কানাডা যখন ‘মানবাধিকার’ এবং ‘অভিবাসী নিরাপত্তা’র কথা বলে, তখন এমন হিন্দুবিদ্বেষমূলক কার্যকলাপকে অবহেলা করা দ্বিচারিতা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অবনতি
ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক ইতিমধ্যেই খালিস্তানি ইস্যুতে উত্তেজনাপূর্ণ। এই ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও বিগড়ে দিতে পারে। প্রবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা শাওন বিন্দা বলেন, “এটি ভারতের সরকারের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়; এটি সরাসরি হিন্দুদের প্রতি ঘৃণার প্রকাশ।” অন্যদিকে Coalition of Hindus of North America (CoHNA) এই ঘটনাকে “একটি লজ্জাজনক দিন” বলে অভিহিত করে মানবাধিকার সংগঠন এবং গণমাধ্যমের নিরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
এই ঘটনার তাৎপর্য শুধু তাৎক্ষণিক উত্তেজনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বহির্বিশ্বে ভারতীয় পরিচয়, ধর্মীয় সহাবস্থান, এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক বিদ্বেষের বিস্তৃতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে। কানাডার প্রশাসনের নীরবতা, এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অসাড় প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত হতে পারে।
World: Anti-India, anti-Hindu slogans at Toronto Khalistani rally. Effigies of Modi, Shah, Jaishankar displayed in “jail” structure. Demand to send 800,000 Hindus back to India. Concerns over hate speech and Canadian inaction.