Terror Attack: জঙ্গি হামলায় নাস্তানাবুদ খোদ জঙ্গি স্পন্সর্ড দেশ

Terror Attack in pakistan

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে গত চার দিনে দুটি পৃথক অভিযানে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৩৫ জঙ্গিকে (Terror Attack) হত্যা করেছে। সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) শনিবার এই ঘটনার বিবরণ প্রকাশ করেছে। এই অভিযানগুলোতে জঙ্গিরা সন্ত্রাসবাদী কাজে জড়িত ছিল এবং তাদের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisements

আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই জঙ্গিরা স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং নিরীহ নাগরিকদের বিরুদ্ধে বহু আক্রমণে জড়িত ছিল। এই ঘটনা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ, যা আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকা, দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর আস্তানা হিসেবে পরিচিত। এই অভিযানগুলো প্রধানত টেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিচালিত হয়েছে। আইএসপিআর-এর মতে, প্রথম অভিযানটি লাক্কি মারওয়াত এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গিদের উপস্থিতি সন্ধান করা হয়।

এই অভিযানে ১৫ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযানটি খাইবার জেলার তিরাহ এলাকায় হয়েছে, যেখানে আরও ২০ জন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়। এই অভিযানগুলোতে পাকিস্তান আর্মি, ফ্রন্টিয়ার কর্পস এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ইউনিটগুলো যৌথভাবে অংশ নিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জঙ্গিরা স্থানীয় জঙ্গি কার্যকলাপে সক্রিয় ছিল এবং নিরীহ লোকদের হত্যায় জড়িত ছিল।

অভিযানের পর এলাকায় স্যানিটাইজেশন অপারেশন চালানো হচ্ছে যাতে কোনো অবশিষ্ট জঙ্গি না থাকে।”পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান প্রদেশে। ২০২২ সালে টিটিপির সঙ্গে সরকারের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের পর থেকে হামলার সংখ্যা বেড়েছে।

সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টাল (এসএটিপি)-এর তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৯২,০০০-এরও বেশি অভিযান চালানো হয়েছে, যাতে হাজার হাজার জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই অভিযানের ফলেআত্মঘাতী হামলার সংখ্যা ২০০৯ সালের ৮৫-এর থেকে ২০১৯ সালে ৮-এ নেমে এসেছে।

Advertisements

তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আবারও উত্থান দেখা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, জানুয়ারি মাসে লাক্কি মারওয়াতে ৩০ জঙ্গি নিহত হয়েছে, এবং ফেব্রুয়ারিতে ডেরা ইসমাইল খানে ৭ জন টিটিপি জঙ্গি হত্যা করা হয়। এই চার দিনের অভিযানটি সেই ধারাবাহিকতার অংশ।এই অভিযানগুলোর পটভূমি খাইবার পাখতুনখোয়ার অস্থিতিশীলতা।

প্রদেশটি আফগানিস্তানের সঙ্গে ২,৬০০ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত ভাগ করে, যা জঙ্গিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করে। টিটিপি, আল-কায়েদা এবং আইএসআইএস-এর মতো গোষ্ঠীগুলো এখান থেকে হামলা চালায়। পাকিস্তান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ‘অপারেশন রাহ-ই-রাস্ত’ এবং ‘অপারেশন জার্ব-ই-আজম’ এর মতো বড় অভিযান চালিয়েছে, যাতে ৩০,০০০-এরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে।

ভিন রাজ্য থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ATM জলিয়াতি, গ্রেফতার যুবক

তবে, আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পর টিটিপির কার্যকলাপ বেড়েছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সম্প্রতি বলেছেন, আফগানিস্তানে জঙ্গি ঘাঁটির বিরুদ্ধে সীমান্ত পার হয়ে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, ফেডারেলি অ্যাডমিনিস্টার্ড ট্রাইবাল এরিয়া (ফাটা) কে ২০১৮ সালে খাইবার পাখতুনখোয়ার সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে, যা স্থানীয় প্রশাসনকে শক্তিশালী করেছে।