চিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের, স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি তুর্কিদের

চিনের  (China) জন্য আবারও নতুন এক বিপদ সেজে উঠেছে পশ্চিম এশিয়ায়। সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সেখানে যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়ে গেছে,…

Syrian Rebels Turkey islamic Party threats China demands separate country for Uyghurs

চিনের  (China) জন্য আবারও নতুন এক বিপদ সেজে উঠেছে পশ্চিম এশিয়ায়। সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সেখানে যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়ে গেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি’ (TIP)। এই গোষ্ঠীটি সরাসরি চীনকে হুমকি দিয়েছে, এবং তারা শপথ নিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হল ড্রাগনল্যান্ডের অংশবিশেষকে ভেঙে একটি নতুন দেশ প্রতিষ্ঠা করা। উল্লেখ্য, সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পেছনে টিআইপির বিরাট ভূমিকা ছিল।

টিআইপির এ হুমকির পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসছে উইঘুর মুসলিমদের উপর চীনের শি জিনপিং সরকারের পাশবিক অত্যাচারের অভিযোগ। উইঘুররা, যারা মূলত পশ্চিম চিনের সিনজিয়াং প্রদেশে বসবাস করে, দীর্ঘদিন ধরে চীনের নির্যাতনের শিকার। তাদের উপর অত্যাচার ও নিপীড়নের কারণে চীনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা ও নিন্দা চলছে। এই পরিস্থিতিতে, টিআইপির যোদ্ধাদের নেতৃত্বে রয়েছেন মূলত উইঘুর মুসলিমরা, যারা সিরিয়ায় সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের দাবি, চীন তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকার নষ্ট করছে, এবং সেই কারণে তারা চীনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত।

   

সিরিয়ার পরিস্থিতির প্রতি লক্ষ্য রাখলে দেখা যায়, সেখানে ২০১১ সালে বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেই যুদ্ধের একপর্যায়ে নানা সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং বিদেশি শক্তির উপস্থিতি বাড়ে, যার মধ্যে তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি (TIP) অন্যতম। এই গোষ্ঠীটি আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাইরিয়া বা তুরস্কে উইঘুর মুসলিমদের অধিকার রক্ষা করা এবং একদিন চিনের শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের মধ্যেই তারা তাদের কার্যকলাপ আরও তীব্র করেছে, এবং এখন তারা চীনকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলছে যে, তারা শী জিনপিং সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।

চীনের জন্য এই হুমকিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুরদের উপর নিপীড়ন বন্ধ করতে চীন আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে, তবে তাতে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। এখন সিরিয়ায় টিআইপির হুমকি এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ চীনের জন্য আরও একটি বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, তাহলে অচিরেই সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে চিনের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হতে পারে, এবং এতে পুরো অঞ্চল উত্তাল হয়ে উঠবে।

এদিকে, পশ্চিম এশিয়ায় গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হতে থাকায়, বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী দেশগুলিও এই সংঘর্ষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। টিআইপি এবং অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি যে চীনকে তাদের শত্রু হিসেবে ঘোষণা করেছে, তা আরও বড় যুদ্ধের ইঙ্গিত দিতে পারে। চিন, যা বর্তমানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক ক্ষমতাশালী দেশ হিসেবে পরিচিত, তা হয়তো এবার এক নতুন সংকটের মধ্যে পড়তে চলেছে, যা তার সামরিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।