নেপালের রাজনীতিতে শুরু হচ্ছে নতুন অধ্যায়(Sushila)। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি আজ সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। নেপালের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো মহিলা এই পদে দায়িত্ব নেবেন। জেন জি আন্দোলনের তীব্র প্রতিবাদ এবং দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলির পদত্যাগের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সঙ্গে সঙ্গে দুই নতুন মন্ত্রীর নামও প্রকাশিত হয়েছে, যারা কার্কির সঙ্গে শপথ নেবেন। এই ঘোষণা নেপালের রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করেছে এবং জনগণের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।সুশীলা কার্কি, যিনি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তাঁর সততা এবং দুর্নীতিবিরোধী মনোভাবের জন্য জেন জি প্রতিবাদকারীদের কাছে জনপ্রিয়।
৭৩ বছর বয়সী কার্কি বিরাটনগরের জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তাঁর ক্যারিয়ারে ১৯৯০-এর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে জেলও খেটেছেন। প্রতিবাদকারীরা ডিসকর্ডে ভোটিং করে তাঁকেই অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করেছিল। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিঙ্গেল এবং প্রতিবাদকারীদের আলোচনার পর কার্কির নাম চূড়ান্ত হয়।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান রাষ্ট্রপতির অফিসে স্থানীয় সময় রাত ৯টায় (ভারতীয় সময় রাত ৯টায় ১৫ মিনিটে) অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ারপারসনসহ শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।দুই নতুন মন্ত্রীর মধ্যে একজন হলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ওমপ্রকাশ আর্যাল, যিনি দুর্নীতিবিরোধী কমিশন গঠনের দায়িত্ব নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরেকজনের নাম এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি, কিন্তু স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো জানাচ্ছে যে, এটি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হবেন। এই তিন সদস্যের ছোট ক্যাবিনেট প্রথম মিটিংয়ে জুডিশিয়াল তদন্ত কমিশন গঠন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে, যা নতুন নির্বাচনের পথ খুলে দেবে।
এই পরিবর্তনের পটভূমি নেপালের সাম্প্রতিক অশান্তি। জেন জি আন্দোলন, যা মূলত তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে, সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু হয়। এই প্রতিবাদে ৫১ জন নিহত এবং ১,৩০০-এর বেশি আহত হয়েছে। মঙ্গলবার ওলির পদত্যাগের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে, কিন্তু আজ রাত থেকে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি হবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে এবং ভারতের সশস্ত্র সীমান্ত বাহিনী (এসএসবি) ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ২৪ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু করেছে।সুশীলা কার্কি তার পূর্বের সাক্ষাৎকারে ভারতের সঙ্গে নেপালের ঐতিহ্যবাহী সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি সম্মান জানিয়েছেন।
Mohammedan SC : মুখ্যামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কাটছে স্পনসর জট? সুপার কাপ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল মহামেডান
এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য দুর্নীতি রোধ এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। জনগণ আশা করছে, কার্কির নেতৃত্বে নেপাল নতুন পথে এগোবে। এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন তুলেছে।