বেলুচিস্তানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত ৪ শিশু আহত ৩৮

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার জেলায় গত বুধবার সকালে একটি স্কুল বাসে ভয়াবহ বিস্ফোরণের (suicide-blast) ঘটনায় কমপক্ষে চার শিশু নিহত এবং ৩৮ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তানের…

suicide-blast in balochistan

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার জেলায় গত বুধবার সকালে একটি স্কুল বাসে ভয়াবহ বিস্ফোরণের (suicide-blast) ঘটনায় কমপক্ষে চার শিশু নিহত এবং ৩৮ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদপত্র ডন এই খবর প্রকাশ করেছে, খুজদারের ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির ইকবাল দাশতির সূত্রের মাদ্ধমে।

এই বিস্ফোরণটি (suicide-blast)জিরো পয়েন্টের কাছে ঘটে, যখন বাসটি সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। দাশতি জানিয়েছেন, এই হামলায় চার শিশু প্রাণ হারিয়েছে এবং ৩৮ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মৃতদেহ এবং আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনা বেলুচিস্তানে চলতে থাকা অশান্তি এবং সন্ত্রাসবাদের একটি মর্মান্তিক উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে।

   

বহু প্রতীক্ষিত ইংল্যান্ড সফরে বোলার নির্বাচনে বিশেষ চমক দিচ্ছে BCCI!

বিস্ফোরণের বিবরণ (suicide-blast)

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই বিস্ফোরণটি (suicide-blast)খুজদার জেলার জিরো পয়েন্ট এলাকায় একটি সুইসাইড কার বোমা হামলার ফলে ঘটেছে। বাসটি একটি সেনা-পরিচালিত স্কুলের ছিল, যেখানে প্রায় ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল। বিস্ফোরণের সময় একটি গাড়ি বাসের সঙ্গে ধাক্কা মারে, যার ফলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।

এই হামলায় বাসটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। খুজদারের ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির ইকবাল দাশতি ডন-এর সঙ্গে কথা বলার সময় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

হামলার পটভূমি

বেলুচিস্তান পাকিস্তানের (suicide-blast)সবচেয়ে অশান্ত প্রদেশগুলির মধ্যে একটি, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবংজঙ্গি সংগঠনগুলির তৎপরতা চলছে। এই হামলার জন্য এখনও কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি, তবে স্থানীয় সূত্র এবং এক্স-এ পোস্ট করা মতামতের ভিত্তিতে সন্দেহের তীর বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর দিকে। বিএলএ একটি মার্কিন-নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন, যারা অতীতে বেলুচিস্তানে একাধিক হামলার জন্য দায়ী।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর (suicide-blast)জনসংযোগ শাখা (আইএসপিআর) এই হামলাকে “ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত” বলে দাবি করেছে, যদিও এই অভিযোগের পক্ষে কোনো কঠিন প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। আইএসপিআর জানিয়েছে, তারা এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে। এই ধরনের অভিযোগ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, বিশেষ করে সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে।

পাকিস্তান সরকারের প্রতিক্রিয়া

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এই হামলা(suicide-blast) দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র।” তিনি নিহত শিশুদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। হামলার প্রকৃতি এবং এর পিছনে কারা জড়িত, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

Advertisements

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই হামলা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। স্কুল বাসে শিশুদের লক্ষ্য করে হামলা (suicide-blast)সন্ত্রাসবাদের নৃশংস রূপকে তুলে ধরেছে। এক্স-এ একাধিক পোস্টে এই হামলাকে “নৃশংস” এবং “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণ এবং সামাজিক মাধ্যমে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও এই ঘটনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এনবিসি নিউজ এবং আল জাজিরা জানিয়েছে, এই হামলা বেলুচিস্তানের অশান্ত পরিস্থিতির একটি প্রমাণ। বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের দীর্ঘদিনের সংঘাত এই অঞ্চলকে একটি অস্থিতিশীল এলাকায় পরিণত করেছে।

বেলুচিস্তানের অশান্তির প্রেক্ষাপট

বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং জঙ্গি হামলা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। বিএলএ-র মতো গোষ্ঠীগুলি পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই করছে। তারা সরকারি স্থাপনা, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলাগুলি প্রায়ই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিচালিত হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বেলুচিস্তানে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) প্রকল্পের কারণে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলি এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে এটি স্থানীয় বেলুচ জনগণের জন্য কোনো সুবিধা নিয়ে আসেনি। এই প্রেক্ষাপটে, স্কুল বাসে হামলার মতো ঘটনা অঞ্চলের অস্থিতিশীলতাকে আরও জোরদার করে।

ভবিষ্যৎ প্রভাব

এই হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। স্কুল বাসের মতো নিরীহ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা জঙ্গি(suicide-blast)গোষ্ঠীগুলির নৈতিক দেউলিয়াপনাকে প্রকাশ করে। পাকিস্তান সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনী এখন এই হামলার জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করতে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য।

এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে পাকিস্তানের আইএসপিআর-এর ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে। এই ধরনের অভিযোগ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

খুজদারে স্কুল বাসে বিস্ফোরণ বেলুচিস্তানের চলমান সংকটের একটি মর্মান্তিক অনুস্মারক। নিরীহ শিশুদের মৃত্যু এবং বহু মানুষের আহত হওয়া এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে। পাকিস্তান সরকারের উপর এখন চাপ রয়েছে যে তারা এই হামলার তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।