যে কোনও সময় ইরানি সুপ্রিম নেতা হত্যার চেষ্টা, ‘বিভীষণ’ আটকাতে নিরাপত্তা বৈঠক

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: এই আরব মুলুকে শরৎ না এলেও পারস্য উপসাগরের খরখরে হাওয়া খানিকটা নরম। তবে উপসাগরের রাজনৈতিক হাওয়া বেশ গরম। দোহা শহরের বিখ্যাত…

Leader Khamenei

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: এই আরব মুলুকে শরৎ না এলেও পারস্য উপসাগরের খরখরে হাওয়া খানিকটা নরম। তবে উপসাগরের রাজনৈতিক হাওয়া বেশ গরম। দোহা শহরের বিখ্যাত লুসাইল টাওয়ারের পাশে শপিং কমপ্লেক্সে রাখা টিভি স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে ইরান (iran) বিরোধী গান। আরব দুনিয়া চেহারায় বড়। তেল বেচে বিশ্বকে চালায়। তবে অন্দরে অন্দরে ফোঁপরা! যেমন পরমাণু শক্তিধর দেশ ইরান। সে দেশে কড়া নিরাপত্তা আছে। তবে সেই নিরাপত্তা হাসতে হাসতে ভেঙে দেয় ইজরায়েল। একটু আগেই ব্রেকিং এল-ইরানি গুপ্তচরদের কিনে ইজরায়েল টার্গেট স্থির করেছে। নিশানায় কে?

Kolkata 24×7 এর মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ সংবাদদাতা সুজানা ইব্রাহিম মোহনা। তিনি বিশ্ব রাজনৈতিক উত্থান পতনের অন্যতম কেন্দ্র কাতারের রাজধানী দোহা শহরে থাকেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর রিপোটার্জ পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তুলে ধরেন।

   

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রপ্রধান তথা দেশটির সর্বচ্চো পদাদিকারী আলি খামেনেই এবার ইজরায়েলের টার্গেট! চরম আতঙ্ক ইরানে। শিয়া ইসলামপন্থী ইরান দেশটির বিরোধী সুন্নি ইসলামপন্থী সৌদি আরব, কাতারসহ বিভিন্ন ইসলামি ধর্মতান্ত্রিক দেশগুলি মনে মনে হাসছে। ইসলামি দুনিয়ার এই শিয়া-সুন্নি বিভাজনে সুন্নিপন্থীরা আমেরিকার ঘনিষ্ঠ। আবার আমেরিকার বিশেষ বন্ধু অ-ইসলামিক দেশ ইজরায়েল। ফলে সুন্নিপন্থীরা আপাত নিরাপদ। তবে ইরানের বিপদ বাড়ছে।

গুপ্তচর পরিকাঠামোয় ইজরায়েলের মতো শক্তিশালী দেশকে আমেরিকা, রাশিয়া সমীহ করে। আর বিরোধীপক্ষ ইরান যতই নিজেকে পরমাণু শক্তিধর করে তুলক তার অন্দরেও ‘বিভীষণ’ ঢুকিয়েছে ইজরায়েল। সেই বিভীষণ কে? উত্তর জানে একমাত্র ইজরায়েলের স্পাই নেটওয়ার্কের সর্বশীর্ষ কর্মকর্তা।
জানা যাচ্ছে ইরানি গুপ্তচর বিভাগেই নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে ইজরায়েল! আশঙ্কা ইরানি গুপ্তচরদের কাছ থেকে তাদের দেশের সর্বচ্চো প্রধান ব্যক্তি খামেনেই কোথায় আছেন সেই তথ্য ইজরায়েল সংগ্রহ করতে মরিয়া। এরকমই আশঙ্কা থেকে অতি সুরক্ষিত স্থানে রাখা হয়েছে ইরানের সর্বচ্চো নেতাকে।

একটু আগে বিশ্বজোড়া ব্রেকিং দেখলাম। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী (জঙ্গি তালিকাভুক্ত) হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে খতম করার জন্য ইজরায়েল সরকারের তরফে ইরানি গুপ্তচরদের তথ্য দিতে বলা হয়েছিল। বিপুল পুরষ্কারের লোভে ইরানি গুপ্তচররা নাসরুল্লাহর গোপন ঠিকানার সন্ধান দেয়। সেই নিশানা ঠিক করে হামলা চালায় ইজরায়েল। হাসান নাসরুল্লাহ নিহত স্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী।

ইরানের অন্দরে কতটা জাল বিছিয়েছে ইজরায়েল তার আরও একটা উদাহরণ হলো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস (জঙ্গি তালিকাভুক্ত)-এর রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে মেরে ফেলার ঘটনা। গত ৩১ আগস্ট ইরানের যে সুরক্ষিত বাড়িতে হানিয়াকে রাখা হয়েছিল সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মারা যায় হানিয়া। তদন্তে উঠে এসেছে ইরানি রক্ষীদের হাত করে ইজরায়েলের গুপ্তচর বিভাগ সেই বাড়িতে বিস্ফোরক রেখেছিল।

হিজবুল্লাহ ও হামাস এই দুই গোষ্ঠী মিত্র। তাদের ঘনিষ্ঠ ইরান। তিনপক্ষের চরম শত্রু ইজরায়েল। তাদের কাছে প্রতিপক্ষের নিরাপত্তা বলয় ভাঙা যেন খেলা। এই খেলায় বারবার ‘বিভীষণ’ খুঁজে নেয় ইজরায়েল। এই কারণে ইরান কাঁপছে।