পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ (shehbaz-sharif) শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এই কথোপকথনে তিনি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, যাকে তিনি ইরানের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার “উদ্ধত লঙ্ঘন” এবং রাষ্ট্রসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ অবমাননা বলে অভিহিত করেছেন।
শরীফ (shehbaz-sharif) ইসরায়েলের এই আক্রমণকে “নির্লজ্জ উস্কানি” হিসেবে বর্ণনা করে ইরানের প্রতি পাকিস্তানের অটল সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করেছেন। গত শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর আক্রমণ চালায়। এই হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন সিনিয়র সামরিক কমান্ডার এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। এর জবাবে ইরানও পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
শেহবাজ শরীফের নিন্দা ও সমর্থন (shehbaz-sharif)
প্রধানমন্ত্রী শরীফ (shehbaz-sharif) ফোনে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথোপকথনে বলেন, “ইসরায়েলের এই আক্রমণ শুধু ইরানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘনই নয়, এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুতর হুমকি।” তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তান ইরানের পাশে রয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে।” শরীফ জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলের এই “অগ্রহণযোগ্য” কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী (shehbaz-sharif) এই আক্রমণের ফলে ইরানের সামরিক ও বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের ক্ষয়ক্ষতির জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ইরানের সিনিয়র সামরিক কমান্ডার এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা একটি কাপুরুষোচিত কাজ, যা ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাবের প্রমাণ।” তিনি ইরানের জনগণের প্রতি সহানুভূতি জানান এবং এই ক্ষতি পূরণে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ইরানের পাল্টা জবাব
ইসরায়েলের আক্রমণের পর ইরান দ্রুত পাল্টা হামলা চালায়। ইরানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই পাল্টা আক্রমণের ফলে ইসরায়েলেও উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।
পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ক
পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশই মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একসঙ্গে কাজ করে। শেহবাজ শরীফ (shehbaz-sharif) ও পেজেশকিয়ানের এই কথোপকথন দুই দেশের মধ্যে গভীর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও স্পষ্ট করেছে। শরীফ বলেন, “পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ভিত্তিতেও দৃঢ়।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের আক্রমণের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে পাকিস্তানের মতো বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে। শরীফ (shehbaz-sharif) রাষ্ট্রসংঘের কাছে এই বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, তবে এই ধরনের আগ্রাসন ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে।”
সবজি বাজারে বাড়তি সুখ, সস্তা আনাজ
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ইসরায়েলের আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে বিরোধ তীব্র। এই সাম্প্রতিক আক্রমণ এই উত্তেজনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংলাপ ও কূটনীতির কোনো বিকল্প নেই।”
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের (shehbaz-sharif) এই বিবৃতি এবং ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথোপকথন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে। পাকিস্তান সবসময়ই আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ভূমিকা আন্তর্জাতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
শরীফ (shehbaz-sharif) ও পেজেশকিয়ান উভয় নেতাই এই কথোপকথনে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রমতি ব্যক্ত করেছেন। পাকিস্তানের জনগণও ইরানের সঙ্গে তাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে মূল্য দেয় এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে দাঁড়য়েছে।