আমেরিকা, ২৩ সেপ্টেম্বর: আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও, ভারতের রুশ তেল ক্রয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন (India Us Ties)। তিনি বলেছেন বলেছেন, ‘আশা করি আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো। তিনি মঙ্গলবার জানিয়েছেন যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আনবেন বলে ঠিক করেছেন। যার মধ্যে ভারতের মতো দেশগুলোর উপর শাস্তিমূলক বাণিজ্য কর আরোপ অন্তর্ভুক্ত, যাতে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়।
রুবিও ভারতকে ‘সম্পূর্ণ মিলনের’ দেশ বলে অভিহিত করলেও, রুশ তেল আমদানিকে ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি বিরক্তির কেন্দ্রবিন্দু’ বলে বর্ণনা করেছেন, যা মস্কোর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করছে। রুবিও এই মন্তব্য ফক্স নিউজের এক সাক্ষাৎকারে করেছেন। যেখানে রুবিও বলেছেন, “ভারতের বিশাল শক্তি চাহিদা রয়েছে, যার মধ্যে তেল, কয়লা এবং গ্যাস অন্তর্ভুক্ত, যা অর্থনীতিকে চালানোর জন্য প্রয়োজন। তারা রাশিয়া থেকে কেনাকাটা করে কারণ রুশ তেল নিষিদ্ধ এবং সস্তা—স্যাঙ্কশনের কারণে বিশ্ব মূল্যের নিচে বিক্রি হচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, এটি রুশ যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে টিকিয়ে রাখছে।”
তিনি যোগ করেছেন যে, ইউরোপকেও রুশ তেল ক্রেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানানো হয়েছে, কারণ তারা এখনও রুশ গ্যাস কিনছে। রুবিওর মতে, চীনকে সরাসরি স্যাঙ্কশন না দেওয়ার কারণ হলো, চীন রুশ তেল শোধন করে বিশ্ববাজারে বিক্রি করে, যা গ্লোবাল তেল মূল্যকে প্রভাবিত করবে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে ট্রাম্প সরকার ইতিমধ্যে ৫০ শতাংশ কর আরোপ করেছে, যা নতুন দ্বৈত মানদণ্ডের অভিযোগ তুলেছে।
ভারতের তেল মন্ত্রক হর্দীপ সিং পুরী বলেছেন যে, দেশটি সস্তা রুশ তেল কিনে কোটি কোটি দরিদ্র ভারতীয়দের সুরক্ষা করছে। ২০২১ সালে ৩ শতাংশ থেকে উঠে ২০২৪ সালে রুশ তেল ভারতের আমদানির ৩৫-৪০ শতাংশ হয়েছে। বাইরের মন্ত্রক বলেছে, ভারতের উপর লক্ষ্যবস্তু করা অযৌক্তিক এবং অযৌক্তিক। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এ.এস. সাহনি জানিয়েছেন যে, রুশ তেল আমদানিতে কোনো বাধা নেই এবং এটি চলবে।
রুবিও ভারতের সাথে আলোচনায় ‘অনেক অগ্রগতি’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন, কিন্তু কৃষি এবং দুগ্ধ খাতে আমেরিকান পণ্যের প্রবেশাধিকার না দেওয়াও সম্পর্কের আরেকটি বিরক্তির কারণ। এই মন্তব্য ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে এসেছে, যেখানে রাশিয়া বিশ্বের তেল রফতানির ১১ শতাংশ সরবরাহ করে। ট্রাম্প-পুতিনের অ্যালাস্কা সামিটে যুদ্ধবিরতির চুক্তি না হলেও, ট্রাম্প বলেছেন যে, ভারতের উপর কর আরোপ রাশিয়াকে মিটিংয়ের জন্য বাধ্য করেছে, কারণ তারা ‘দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা’ হারাচ্ছে।
রুবিওর বক্তব্যে স্পষ্ট যে, আমেরিকা ভারতকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য কমাতে, কিন্তু চীনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অর্থনীতির ভয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে। ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের উপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে অস্থির, কারণ তারা চীন-শোধিত রুশ তেল কিনছে। ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক কোয়াড এবং প্রযুক্তি সহযোগিতায় শক্তিশালী হলেও, রুশ তেল ইস্যুতে উত্তেজনা বাড়ছে। রুবিও বলেছেন, “আমরা ভারতকে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বলে মনে করি, কিন্তু সব ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ মিলবে না।” সেনেট বিলে চীন এবং ভারতের উপর ১০০ শতাংশ করের প্রস্তাব ছিল, কিন্তু ইউরোপের চাপে এটি স্থগিত।
ভারতের অবস্থান স্পষ্ট—এটি জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য সস্তা তেল কিনছে, এবং আমেরিকার স্যাঙ্কশন যদি বাধা দেয়, তাহলে অন্য উৎস থেকে চাহিদা মেটানো যাবে।এই বিতর্ক বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে ভারতের মতো দেশগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যামাজনে Realme GT 7 Pro-তে ৫,০০০ ছাড়, দুর্দান্ত ফোন কেনার এই সুযোগ
রুবিওর ‘ফিক্স ইট’ মন্তব্য ভারত-আমেরিকা কূটনীতিতে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে। ভারত সরকার এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি, কিন্তু রাজনৈতিক মহলে এটি আলোড়ন তুলেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে এই ইস্যু ভারতের কূটনৈতিক ভারসাম্যের পরীক্ষা নেবে। ভক্তরা অপেক্ষায় রয়েছেন পরবর্তী উন্নয়নের।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
