কাবুলিয়ালাদের দেশে বন্ধ হলো “রেডিও বেগম”

সারা পৃথিবী জুড়ে যখন নারী স্বাধীনতা নিয়ে নানা জনের নানা মত , তখনই বিপরীত চিত্র নজরে এলো কাবুলে। ২০২১ সালে কাবুল দখল করে তালিবানরা। তখনই…

সারা পৃথিবী জুড়ে যখন নারী স্বাধীনতা নিয়ে নানা জনের নানা মত , তখনই বিপরীত চিত্র নজরে এলো কাবুলে। ২০২১ সালে কাবুল দখল করে তালিবানরা। তখনই নারী স্বাধীনতা তলানিতে ঠেকেছিল দেশে। সেই কফিনেই শেষ পেরেক পুঁতে দিলো তালিবানরা, বন্ধ হলো দেশের একমাত্র মহিলা পরিচালিত রেডিও স্টেশন “রেডিও বেগম।”

বন্ধ করে দেওয়া হলো রেডিও থেকে প্রচারিত সমস্ত সম্প্রচার। যদিও রেডিও স্টেশন পরিচালনা কমিটি বলেছে স্টেশন থেকে স্বাস্থ্য, মনস্তত্ব এবং আধ্যাত্মিক বিষয়ের উপরেই অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। রাজনৈতিক কোনো ব্যাপারে মতামত প্রকাশ করেনা রেডিও স্টেশন সংস্থা। ৬ ঘন্টার সম্প্রচারে নারীশিক্ষার উপরেই জোর দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে রেডিও সংস্থা। আফগানিস্তানের স্থানীয় সূত্রের খবর, তালিবান প্রশাসন হঠাৎ করেই ‘রেডিও বেগম’ বন্ধের নির্দেশ দেয়। অভিযোগ, রেডিওটি ইসলামিক নিয়ম লঙ্ঘন করছিল। তবে মানবাধিকার কর্মীদের মতে, আসল কারণ হলো, এটি আফগান নারীদের কণ্ঠ তুলে ধরছিল, যা তালিবানরা সহ্য করতে পারছে না।

   

‘রেডিও বেগম’ ছিল আফগানিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় রেডিও চ্যানেল, যা বিশেষ করে নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিয়ে আলোচনা করত। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগান নারীরা একের পর এক নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছেন—বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, কর্মস্থলে যাওয়া, এমনকি জনসমক্ষে স্বাধীনভাবে চলাফেরাও প্রায় নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। এই কঠিন সময়ে ‘রেডিও বেগম’ ছিল তাদের একমাত্র ভরসা।
রেডিওর মালিক এবং সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, তারা আইন মেনে কাজ করছিলেন এবং কোনো বিধি লঙ্ঘন করেননি। তারা তালেবান সরকারের কাছে পুনরায় চালুর অনুমতি চেয়েছেন, তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এটি আর চালু হবে না।

এই ঘটনার পর আফগান নারীরা আরও একবার বুঝতে পারলেন, তাদের জন্য স্বাধীন মত প্রকাশের সব পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তালেবান শাসনে নারীদের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে, এবং ‘রেডিও বেগম’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের আরেকটি বড় সুযোগ হারিয়ে গেল।