‘অপমান মেনে নেবে না ভারত’, রুশ তেলে মার্কিন চাপের বিরুদ্ধে মোদীর পাশে পুতিন

দক্ষিণ রাশিয়ার সোচিতে ভ্যালদাই ডিসকাশন ফোরাম-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে সরাসরি মার্কিন প্রশাসনকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর অভিযোগ, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা ভারতের মতো…

Putin India Russia Trade

দক্ষিণ রাশিয়ার সোচিতে ভ্যালদাই ডিসকাশন ফোরাম-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে সরাসরি মার্কিন প্রশাসনকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর অভিযোগ, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা ভারতের মতো ঘনিষ্ঠ অংশীদারকে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি কমাতে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু এই চাপই শেষ পর্যন্ত আমেরিকার অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।

Advertisements

পুতিনের স্পষ্ট সতর্কবার্তা, “রাশিয়ার বাণিজ্য অংশীদারদের উপর যদি শুল্ক চাপানো হয়, তবে জ্বালানির দাম বিশ্ববাজারে আরও চড়বে। ফেডারেল রিজার্ভকে বাধ্য হয়ে সুদের হার উঁচু রাখতে হবে। ফলে আমেরিকার অর্থনীতিই থমকে যাবে।”

   

ভারত-রাশিয়ার বন্ধুত্বের রসায়ন

ভারত প্রসঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কণ্ঠে আস্থা ও আন্তরিকতার ছাপ স্পষ্ট। তিনি বলেন, “আমাদের কখনও ভারতের সঙ্গে কোনও সমস্যা হয়নি। কোনও দিনই হয়নি। ভারত বাইরের চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিনি। তিনি কখনও ভারতকে অপমানিত হতে দেবেন না। ভারতীয় জনগণও তা মেনে নেবে না।”

রুশ প্রেসিডেন্টের হিসাবে, যদি ভারত রুশ তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করে, তবে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৯ থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ডিসেম্বরেই ভারত সফর Putin India Russia Trade

এই আস্থা ও ঘনিষ্ঠতাকেই আরও জোরদার করতে ডিসেম্বরের গোড়ায় ভারতে আসার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন পুতিন। এর আগে তিনি রুশ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য ফেরাতে পদক্ষেপ নিতে। রাশিয়ার তরফে কৃষিজ পণ্য ও ওষুধ আমদানি বাড়ানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

পুতিন বলেন, “ভারতের কৃষিপণ্য ও ফার্মাসিউটিক্যালস রাশিয়ার বাজারে বেশি করে জায়গা পাবে। এভাবেই দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও সমানতালে এগোবে।”

মার্কিন দ্বিচারিতা নিয়ে কড়া কটাক্ষ

একইসঙ্গে আমেরিকার নীতিকে দ্বিচারিতা বলে কটাক্ষ করেন পুতিন। তাঁর মন্তব্য, “ভারতকে রুশ জ্বালানি থেকে দূরে থাকতে চাপ দিচ্ছে আমেরিকা। অথচ নিজেরাই রাশিয়ার উপর নির্ভর করছে। মার্কিন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলির জ্বালানির জন্য আমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী। এটাই আসল ভণ্ডামি।”

সোচির ফোরামের মঞ্চ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য কেবল আমেরিকাকেই চ্যালেঞ্জ জানায়নি, বরং ভারত-রাশিয়ার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বকেও নতুন মাত্রা দিয়েছে। তাঁর বার্তায় স্পষ্ট— বাইরের চাপ যতই আসুক, নয়া দিল্লি ও মস্কোর সম্পর্ক ভরসার মাটিতেই দাঁড়িয়ে আছে।