পাবলিক সার্ভিস প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ পূর্ব বঙ্গ, সচিবালয়ে মোতায়েন প্যারামিলিটারি

বাংলাদেশের (east-bengal) অন্তর্বর্তী সরকার, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে, মঙ্গলবার ঢাকার সচিবালয়ে প্যারামিলিটারি বাহিনী মোতায়েন করেছে কারণ সরকারি কর্মচারীদের একটি বিতর্কিত নতুন সার্ভিস আইনের বিরুদ্ধে…

east-bengal protest going on

বাংলাদেশের (east-bengal) অন্তর্বর্তী সরকার, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে, মঙ্গলবার ঢাকার সচিবালয়ে প্যারামিলিটারি বাহিনী মোতায়েন করেছে কারণ সরকারি কর্মচারীদের একটি বিতর্কিত নতুন সার্ভিস আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চতুর্থ দিনে পদার্পণ করেছে। এই প্রতিবাদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমকে প্রায় স্থবির করে দিয়েছে, যেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যালয় অবস্থিত।

পিটিআই-এর মতে

পিটিআই-এর মতে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (east-bengal)(বিজিবি), পুলিশের স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস (সোয়াট) ইউনিট এবং অপরাধবিরোধী এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (আরএবি)-এর সদস্যরা সচিবালয় কমপ্লেক্সের প্রধান প্রবেশপথে মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সচিবালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় সমাবেশ ও জনসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

   

সাংবাদিক এবং দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ (east-bengal)

সাংবাদিক এবং দর্শনার্থীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা ক্রমবর্ধমান অশান্তির মধ্যে নিরাপত্তা বিধিনিষেধকে আরও কঠোর করেছে। এই প্রতিবাদ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের পটভূমিতে উত্থিত হয়েছে, কারণ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নয় মাসের শাসনকালে জনগণের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঢাকা (east-bengal)ট্রিবিউন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, যা নির্বাচিত নেতৃত্বের জন্য জনগণের দাবিকে আরও তীব্র করেছে।

প্রতিবাদের কারণ

প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু হলো ২০২৫ সালের পাবলিক সার্ভিস (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, যা রাষ্ট্রপতি রবিবার জারি করেছেন। এই অধ্যাদেশ সরকারকে চার ধরনের শৃঙ্খলাজনিত অপরাধের জন্য কর্মচারীদের শো-কজ নোটিশের মাধ্যমে বিভাগীয় কার্যক্রম ছাড়াই বরখাস্ত করার ক্ষমতা দেয়। অধ্যাদেশটি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, যারা এটিকে “অবৈধ কালো আইন” হিসেবে অভিহিত করে প্রতিবাদে নেমেছে।

প্রতিবাদকারী কর্মচারীরা “আমাদের রক্তে আগুন জ্বলেছে”, “অবৈধ কালো আইন বাতিল করো”, “কর্মচারীরা এই অবৈধ আইন প্রত্যাখ্যান করে”, “আমরা এটি মেনে নেব না”, “১৮ লাখ কর্মচারী ঐক্যবদ্ধ হও” এবং “কোনো আপস নয়, কেবল সংগ্রাম” জাতীয় স্লোগান দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে। সচিবালয়ে অবস্থিত সকল কর্মচারী সংগঠন এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পাল্টা প্রতিবাদ

প্রতিবাদের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। বিজিবি, সোয়াট এবং আরএবি-এর সদস্যরা নিয়মিত পুলিশ এবং অন্যান্য বিশেষ ইউনিটের সঙ্গে মিলে কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের মিত্র ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গ্রুপ জুলাই মঞ্চ সচিবালয়ের বাইরে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিবাদ শুরু করেছে, যদিও তাদের সমাবেশ তুলনামূলকভাবে ছোট। এই পাল্টা প্রতিবাদ নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ঢাকা (east-bengal) মেট্রোপলিটন পুলিশ সচিবালয় এলাকায় সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে এবং সাংবাদিক ও দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গৃহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শুধুমাত্র কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এই বিধিনিষেধ আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আরোপ করা হয়েছে বলে ঢাকা ট্রিবিউন জানিয়েছে।

রাজনৈতিক ও সামাজিক পটভূমি

এই প্রতিবাদ জাতীয় নির্বাচনের দাবির সঙ্গে জড়িত একটি বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ। ২০২৪ সালের আগস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে, নয় মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচনের কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হওয়ায় জনগণের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) এবং সেনাবাহিনী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত সপ্তাহে ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছেন(east-bengal)।

Advertisements

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউনূসের সরকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি হচ্ছে। ঢাকা ট্রিবিউন জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে অপরাধ ও সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে, যা জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এছাড়া, ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে তিনি শেখ হাসিনার সরকারকে “বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ একনায়কতান্ত্রিক সরকার” বলে অভিহিত করেছিলেন।

অধ্যাদেশের বিস্তারিত

পাবলিক সার্ভিস (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫, ২০১৮ সালের পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্টে সংশোধনী এনেছে। এই অধ্যাদেশে চার ধরনের আচরণকে শৃঙ্খলাজনিত অপরাধ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে: অবাধ্যতা, অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিতি, অন্যদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া এবং অন্যান্য শৃঙ্খলাভঙ্গ। এই অপরাধের জন্য কর্মচারীদের ১৪ দিনের মধ্যে শো-কজ নোটিশের মাধ্যমে বরখাস্ত, পদাবনতি বা অপসারণ করা যেতে পারে, যা আনুষ্ঠানিক বিভাগীয় কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা বাদ দেয়।

কর্মচারীরা এই অধ্যাদেশকে তাদের চাকরির নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে এবং এটিকে “দমনমূলক” বলে অভিহিত করেছে। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, তারা অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চালিয়ে যাবে।

পহেলগাঁও হামলা অগ্রহণযোগ্য, বিবৃতি ন্যাশনাল কাউন্সিল প্রেসিডেন্টের

রাজনৈতিক চাপ ও নির্বাচনের দাবি

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় বিলম্ব করায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে(east-bengal)। বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, “সরকার যদি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে বিএনপির পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখা কঠিন হবে।” এছাড়া, ঢাকা সাউথ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ নিয়ে বিরোধে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা প্রতিবাদ শুরু করেছে, যা সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে।

ইউনূস গত সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনের অভাবে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন, তবে তাঁর উপদেষ্টা পরিষদ এই গুজব অস্বীকার করে বলেছে, তিনি পদত্যাগ করছেন না। তবে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি এবং জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদ সরকারের স্থিতিশীলতার উপর প্রশ্ন তুলেছে।

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে একটি জটিল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের মুখোমুখি। পাবলিক সার্ভিস (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের প্রতিবাদ, নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি দেশটিকে একটি গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

সচিবালয়ে প্যারামিলিটারি বাহিনী মোতায়েন এবং পাল্টা প্রতিবাদ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে। এই অশান্তি কীভাবে সমাধান হবে এবং ইউনূসের সরকার কীভাবে নির্বাচন ও সংস্কারের দাবি পূরণ করবে, তা আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।