রাওয়ালাকোট: পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (Lashkar dual-use mosque POK) এর খাইগালা এলাকায় লাশকর-ই-তৈবা একটি নতুন ‘ডুয়াল ইউজ’ সুবিধা নির্মাণ করছে, যা তারা মসজিদ বলে দাবি করলেও স্থানীয় নেতাদের মুখপাত্ররা স্পষ্ট করে বলছেন এটি তাদের ‘মারকাজ’ যা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্যও ব্যবহার হবে।
এই আল-আকসা মারকাজ নির্মাণের খবর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রাডারে ধরা পড়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে এই ধরণের মসজিদ শুধু ধর্মীয় কারণে ব্যবহার হবে না। এই মসজিদে স্থান পাবে সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসবাদী শিক্ষা দেওয়া হবে।
যোগী রাজ্যে SIR নিয়ে বড় পদক্ষেপ
এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। ভারত সরকার এর বিরুদ্ধে কড়া সতর্কবাণী জারি করেছে।লস্করের এই নতুন উদ্যোগের সূত্রপাত রাওয়ালাকোটের খাইগালা বাজার এলাকায়। স্থানীয় সূত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে লস্করের পিওকে মুখপাত্র আমির জিয়াকে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে তিনি প্রথমে বলছেন, “এটি শুধুমাত্র একটি মসজিদ, ধর্মীয় কাজের জন্য নির্মিত।” কিন্তু পরে অসতর্কতাবশত তিনি বলে ফেলেন, “এটি আল-আকসা মারকাজ, যা আমাদের কার্যক্রমের জন্যও ব্যবহার হবে।”
এই স্লিপ-আপ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য সোনার খনির মতো প্রমাণ হয়ে উঠেছে। আমির জিয়া, যিনি লস্করের স্থানীয় প্রচারক হিসেবে পরিচিত, এই মারকাজকে ‘আকসা ফ্লাড’ অপারেশনের স্মৃতিচিহ্ন বলে বর্ণনা করেছেন—যা হামাসের গাজা হামলার নামে। এই নির্মাণ কাজ গত কয়েক মাস ধরে চলছে, এবং স্থানীয় লোকজন বলছেন যে এটি একটি সাধারণ মসজিদের মতো দেখতে না হলেও, চারপাশে উঁচু দেয়াল এবং গোপন প্রবেশপথের ইঙ্গিত রয়েছে।
লস্করের এই কৌশল নতুন নয়, কিন্তু এটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সংগঠনটি তার মূল কেন্দ্র মারকাজ-ই-তৈবা (মুরিদকে, লাহোরের কাছে) এবং অন্যান্য বড় ক্যাম্পগুলোর পরিবর্তে পিওকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছোট মারকাজ গড়ে তুলছে। এর উদ্দেশ্য স্পষ্ট: ভারতীয় বিমান হামলা বা ড্রোন আক্রমণের সময় জঙ্গিদের লুকিয়ে রাখা এবং দ্রুত স্থানান্তর করা।
২০১৯-এর বালাকোট হামলার পর থেকে লেট এমন কৌশল অবলম্বন করছে, যাতে বড় টার্গেট এড়ানো যায়। খাইগালা এলাকা রাওয়ালাকোটের কাছে অবস্থিত, যা পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটির সান্নিধ্যে এখানে জৈশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম) এবং অন্যান্য গ্রুপের সঙ্গে লস্করের সমন্বয় দেখা যায়। গত ফেব্রুয়ারিতে রাওয়ালাকোটে একটি ‘কাশ্মীর সলিডারিটি অ্যান্ড হামাস অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ কনফারেন্সে হামাসের প্রতিনিধি ড. খালিদ আল-কাদুমি উপস্থিত ছিলেন, যেখানে লেট এবং জেএমের শীর্ষ নেতারা অংশ নিয়েছিলেন। এই ঘটনা লেটের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ককে তুলে ধরে।
লেটের ইতিহাস সন্ত্রাসের কালো অধ্যায়ে ভরা। ১৯৮৭ সালে হাফিজ সাঈদ এবং জাকি-উর-রেহমান লকভির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন মারকাজ-উদ-দাওয়া-ওয়াল-ইরশাদের (এমডিআই) সশস্ত্র শাখা হিসেবে শুরু হয়। আহলে হাদিস মতাদর্শ অনুসরণ করে তারা আফগানিস্তানের সোভিয়েত বিরোধী যুদ্ধ থেকে কাশ্মীরে ফোকাস সরিয়েছে। ২০০৮-এর মুম্বই হামলায় ১৬৬ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী এই গ্রুপ, যা জামাত-উদ-দাওয়া (জুডি) নামে ছদ্মবেশে কাজ করে।
