মরিশাসের জাতীয় দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী নবীন রামগুলাম ঘোষণা করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মরিশাসের ৫৭তম জাতীয় দিবস উদযাপনে “অতিথি হিসেবে” উপস্থিত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ১১-১২ মার্চ পোর্ট লুইস…

short-samachar

মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী নবীন রামগুলাম ঘোষণা করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মরিশাসের ৫৭তম জাতীয় দিবস উদযাপনে “অতিথি হিসেবে” উপস্থিত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ১১-১২ মার্চ পোর্ট লুইস সফরে যাবেন। ১৯৬৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের দিন ১২ মার্চ, মরিশাসের জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়।
রামগুলাম মরিশাসের সংসদে বক্তৃতায় বলেছেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমার আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে সম্মত হয়েছেন। তার এই উপস্থিতি আমাদের জন্য একটি বিরল গৌরবের বিষয়, বিশেষ করে তার অত্যন্ত ব্যস্ত সময়সূচী এবং প্যারিস ও যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক সফরের পরেও তিনি আমাদের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সম্মত হয়েছেন।”
রামগোলাম আরও বলেন, মোদীর এই সফর ভারত এবং মরিশাসের মধ্যকার দৃঢ় এবং স্থায়ী সম্পর্কের একটি প্রমাণ। “তিনি আমাদের বিশেষ অতিথি হিসেবে এখানে আসতে সম্মত হয়েছেন। মোদীর এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার নিদর্শন”।
ভারত-মরিশাসের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ সোপান
ভারতের সঙ্গে মরিশাসের সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। মরিশাসের ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ, যা দুই দেশের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
আগামী ১২ মার্চ মরিশাসের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবেন। রামগুলাম আরও জানান, মোদীর সফর বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাধ্যমে ভারত-মরিশাসের সম্পর্কের আরও গভীরতার প্রমাণ মেলে।
মরিশাসের জাতীয় দিবস: ইতিহাস এবং তাৎপর্য
মরিশাসের প্রতি বছর ১২ মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। যা ১৯৬৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মরিশাসের স্বাধীনতা অর্জনকে স্মরণ করে। এই দিনটি ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ ১৯৯২ সালে মরিশাসের গণতন্ত্রের আওতায় আসার পর থেকে এই দিনটি তাদের সাংবিধানিক পরিপ্রেক্ষিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মরিশাসের জনগণের কাছে এই দিনটি স্বাধীনতা এবং জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতীক।
এছাড়া ভারত এবং মরিশাসের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী গত নভেম্বরে রামগুলামকে তার ঐতিহাসিক নির্বাচনী বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। মোদী তার শুভেচ্ছায় জানিয়েছিলেন, তিনি রামগুলামকে সঙ্গে কাজ করতে চান এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী।
মোদী-রামগুলামের সম্পর্ক: 
ভারত-মরিশাসের সম্পর্ক এক বিশেষ সম্পর্ক, যা শুধু বাণিজ্য ও রাজনীতি নয়, বরং সংস্কৃতি ও ইতিহাসেও গভীরভাবে প্রোথিত। প্রধানমন্ত্রী মোদী মরিশাসের ভারতীয় জনগণের জন্য ঐতিহাসিক আবেগ এবং সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। মোদী এবং রামগুলামের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভবিষ্যতে এই দুটি দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় এবং স্থিতিশীল করবে।
মরিশাসের ভারতীয় অভিবাসীদের অত্যধিক সংখ্যার ফলে, দেশটি ভারতের সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এই সংস্কৃতিগত সম্পর্কের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়ে উঠেছে এবং একে অপরের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মরিশাসের সফর আগামী মার্চ মাসে দুই দেশের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। ১২ মার্চ মরিশাসের জাতীয় দিবসে তার উপস্থিতি ভারত এবং মরিশাসের সম্পর্কের আরও উন্নতি এবং গভীরতার প্রমাণ হবে। মোদীর এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাস এবং ভবিষ্যতকে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে শক্তিশালী করবে।