মহাকাশ ও প্রযুক্তি নিয়ে এলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠক মোদির

ধনকুবের এলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামস্বামীর সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী…

PM Modi Meets Elon Musk to Discuss Space and Technology

ধনকুবের এলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামস্বামীর সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে দুই দিনের মার্কিন সফরে রয়েছেন। এই সফরের সময় তার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বৈঠকটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক, কারণ ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মোদির সঙ্গে এটি তাঁর প্রথম বৈঠক হবে।

মোদি তার সফরের প্রথম দিনেই এলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিশ্বের ধনকুবেরদের মধ্যে অন্যতম এলন মাস্কের সঙ্গে মোদির বৈঠক বেশ গুরুত্বের সাথে নজর কাড়ে। এক্স হ্যান্ডলে তিনি এই বৈঠকের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, ‘ওয়াশিংটনে এলন মাস্কের সঙ্গে অত্যন্ত চমৎকার একটি বৈঠক হয়েছে। নানা বিষয়ে কথা হয়েছে আমাদের। এর মধ্যে যেগুলি সম্পর্কে ওঁর প্যাশন রয়েছে, যেমন মহাকাশ, প্রযুক্তি, আবিষ্কার। আমি কথা বললাম ‘ন্যূনতম সরকার, সর্বোচ্চ শাসন’ প্রতিষ্ঠায় ভারতের প্রচেষ্টা সম্পর্কে।’

   

এছাড়া, মোদির সফরের অন্যতম অংশ ছিল মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজের সঙ্গে বৈঠক। মোদি জানিয়েছেন, “ভারতের ‘ভালো বন্ধু’ মাইকেলের সঙ্গে প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁর।” মাইকেল ওয়াল্টজের সঙ্গে বৈঠক ভারতের নিরাপত্তা কৌশল এবং প্রযুক্তি উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা ছিল। ভারতের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, এবং এই বৈঠকটি সেই দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মোদি ও ওয়াল্টজের বৈঠকে ভারতের প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো ছিল মূল ফোকাস। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ওয়াল্টজকে ভারতের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এই বৈঠকটি আমেরিকার সঙ্গে ভারতীয় সম্পর্কের আরও উন্নতি ঘটানোর পথ তৈরি করবে।

এছাড়াও, মোদি এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করার বিষয়ে আলোচনা করবেন। এই বৈঠকটি শুল্ক, অভিবাসী ইস্যু, বাণিজ্য সম্পর্ক, এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তা ইস্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির ওপর কেন্দ্রিত হবে। বিশেষ করে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হবে।

ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পর এ পর্যন্ত তিনি তিনজন বিদেশি রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা হলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা, এবং জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লা। এই বৈঠকগুলোতে প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তবে, মোদির সঙ্গে বৈঠকটি হবে বিশেষ গুরুত্বের, কারণ ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক গত কয়েক বছরে আরও দৃঢ় হয়েছে।

Advertisements

এছাড়াও, আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান তুলসী গাবার্ড, যাকে ‘মোদির বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত, তার সঙ্গেও মোদি সাক্ষাৎ করেছেন। মোদি তুলসীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তুলসী গাবার্ডের সাথে মোদির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং এটি ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের উন্নতি করতে সাহায্য করবে।

মোদি এই সফরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন, যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক। এর মাধ্যমে ভারত ও আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

মোদি সফরের মাধ্যমে ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দিকটি আরও শক্তিশালী করতে চান। ভারতের প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে আলোচনা করা হবে, যা ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে আরও উচ্চতর স্থান দেবে।

ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে এই সম্পর্ক উন্নতির মাধ্যমে বিশ্বের বড় শক্তির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও ভালো হবে। এই বৈঠকগুলো থেকে আসা সিদ্ধান্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপগুলি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছেন এই সফর ভারতের কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। ভারতের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে।