পাকিস্তানের পেশোয়ারে ফের জঙ্গি হানা। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে সদর মেন রোডে অবস্থিত ফ্রন্টিয়ার কনস্ট্যাবুলারি (FC) সদর দফতরে সমন্বিত হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। একের পর এক দু’টি ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অভিযুক্তদের গুলির লড়াই এখনও চলছে। প্রাথমিক হিসাবে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে দুই নিরাপত্তাকর্মী। আরও অন্তত চার জন আহত।
সূত্রের খবর, হামলার শুরুতেই FC প্রধান গেটের সামনে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। একই সঙ্গে মোটরবাইক স্ট্যান্ডের কাছে আরেকটি আইইডি (IED) বিস্ফোরণ হয়। পরপর বিস্ফোরণে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার সুযোগে তিন থেকে পাঁচ জন জঙ্গি সদর দফতরের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে এবং খুব কাছ থেকে নিরাপত্তা কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে।
গোটা এলাকা নিরাপত্তার ঘেরাটোপে
ঘটনার পর আহতদের দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্য সহ অন্তত চার জন চিকিৎসাধীন বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে গোটা এলাকার নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। সদর ও আশপাশের রাস্তাগুলি বন্ধ করে বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দফতরের বাইরের পরিধি সম্পূর্ণ দখল নিলেও ভবনের ভেতর জঙ্গিদের তল্লাশি ও ‘ক্লিয়ারিং অ্যাকশন’ চলছে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই হামলাকারীকে নিকেশ করা হয়েছে। তবে মোট কতজন হামলায় অংশ নিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
বর্ধমান জঙ্গি তৎপরতার প্রেক্ষাপট Peshawar FC Headquarters Attack
সম্প্রতি পাকিস্তানে ফের বাড়ছে সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ। গত ১১ নভেম্বর ইসলামাবাদের জেলা আদালত চত্বরে পুলিশ বাহিনীকে নিশানা করে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল কমপক্ষে ১২ জনের, আহত হয় ২৭ জন। সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP) বা তার কোনও শাখা। হামলার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানে শরিয়ত আইন কার্যকর করার দাবি চাপানো।
নতুন করে FC সদর দফতরে এই আত্মঘাতী হামলা ও বন্দুকযুদ্ধ পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্ন তুলেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, জঙ্গি সংগঠনগুলির “আত্মবিশ্বাস” এবং আগ্রাসন দুইই স্পষ্টভাবে বাড়ছে।
সরকারি তরফে এখনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা না হলেও, প্রতিরক্ষা মহল আশঙ্কা করছে, এ ধরনের ধারাবাহিক হামলা পাকিস্তানকে ফের অস্থির নিরাপত্তা পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে।
