“ভারত মার্সিডিজ, পাকিস্তান ডাম্পার…” বিদেশের মাটিতে বিস্ফোরক পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভির (Mohsin Naqvi) একটি বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তীব্র আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। একজন স্বদেশী নেতার মুখে এই বক্তব্য…

Pakistan’s Mohsin Naqvi Sparks Controversy in Riyadh with “India Mercedes, Pakistan Dumper” Remark

প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভির (Mohsin Naqvi) একটি বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তীব্র আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। একজন স্বদেশী নেতার মুখে এই বক্তব্য শোনা যায়নি, বরং বিদেশী মাটিতে, সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে, তিনি এই বিস্ফোরক উক্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁর শব্দগুলি ছিল, “ভারত একটি চকচকে মার্সিডিজ, আর আমরা একটি কাঁকড়ায় ভরা ডাম্পার। যদি আমরা সংঘর্ষ ঘটাই, তাহলে মার্সিডিজের উপর কী প্রভাব পড়বে, তা কল্পনা করুন।” এই উক্তি, যা প্রথমে সৌদি আরবের একটি সভায় উচ্চারিত হয়েছিল, এখন বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে।

মোহসিন নকভির এই বক্তব্যের মধ্যে একটি স্পষ্ট সেনাবাহিনীবাদী ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে। এটি একধরনের সামরিক শক্তির তুলনা, যেখানে ভারতকে একটি উন্নত ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে, আর পাকিস্তানকে একটি কম শক্তিশালী, তবে সম্ভাব্যভাবে বড় ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখা একটি শক্তি হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই উক্তি, যা প্রথমে সৌদি আরবের সাথে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রসঙ্গে উচ্চারিত হয়েছিল, এখন সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

   

ভারতের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যের উপর তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ এবং মিডিয়া এই উক্তিকে একটি অসৎ ও অবাস্তব তুলনা হিসাবে গণ্য করেছেন। ভারতের সামরিক শক্তির তুলনায় পাকিস্তানের অবস্থান বিশ্বব্যাপী স্পষ্ট, যেখানে ভারতের সামরিক বাজেট, প্রযুক্তি, এবং সেনাবাহিনীর আকার সব ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের থেকে অনেক বেশি। তাই এই তুলনাকে অনেকে একটি বাস্তবতার অস্বীকার হিসাবে দেখছেন।

এই বক্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির একটি চিত্রও ফুটে উঠেছে। পাকিস্তানের সরকার এবং সামরিক নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা করছে, যদিও বাস্তবতা অন্যরকম। এই উক্তি সৌদি আরবের মতো একটি মুসলিম দেশের সামনে উচ্চারিত হওয়ার কারণও আলোচনার বিষয়। পাকিস্তান সৌদি আরবের সাথে তার ঐতিহ্যগত সম্পর্ক এবং সামরিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করতে চেষ্টা করছে, এবং এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সৌদি আরবের সামনে একটি নির্দিষ্ট সেনাবাহিনীবাদী ভাবনা প্রকাশ করেছেন।

Advertisements

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে, এই বক্তব্য আরও বেশি অসৎ মনে হয়। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট, মুদ্রাস্ফীতি, এবং সামরিক ব্যয়ের তুলনায় ভারতের অবস্থান অনেক শক্তিশালী। তাই এই তুলনাকে অনেকে একটি বাস্তবতার অস্বীকার হিসাবে দেখছেন।

এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ আরও বিশৃঙ্খল হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সাথে সাথে, এই বক্তব্য পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যেখানে এই ধরনের উক্তি দেশের অভ্যন্তরীণ সমালোচনার মুখে পড়তে পারে।

সার্থকভাবে, মোহসিন নকভির এই বক্তব্য একটি বিস্ফোরক বিষয় হয়ে উঠেছে, যা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের জটিলতা এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির একটি চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। এই উক্তি, যা প্রথমে একটি সৌদি আরবের সভায় উচ্চারিত হয়েছিল, এখন বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে, এবং এর প্রভাব দীর্ঘদিন ধরে অনুভূত হতে পারে।