ফেরার টিকিট না থাকলে ‘ভিখারি চক্রে’র পাণ্ডা পাকিস্তানিদের হজে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সৌদির

হজযাত্রীদের (Hajj Pilgrims) নিয়ে পাকিস্তানের (Pakistan) প্রতি সৌদি আরবের (Saudi Arabia) ক্ষোভ এবার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিবছর হজের মরশুমে পাকিস্তান (Pakistan) থেকে মক্কা ও মদিনায়…

Pakistani Hajj Pilgrims have to sign afidevit before visiting Saudi Arabia

হজযাত্রীদের (Hajj Pilgrims) নিয়ে পাকিস্তানের (Pakistan) প্রতি সৌদি আরবের (Saudi Arabia) ক্ষোভ এবার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিবছর হজের মরশুমে পাকিস্তান (Pakistan) থেকে মক্কা ও মদিনায় বিপুল সংখ্যক ভিক্ষুকের আগমন এবং তাঁদের কার্যকলাপ সৌদি প্রশাসনের (Saudi Arabia) সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে। ফলস্বরূপ, ইসলামাবাদের জন্য নতুন নিয়ম জারি করেছে সৌদি সরকার (Saudi Arabia)। এবার থেকে হজযাত্রীদের আগে মুচলেকা দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, তাঁরা ধর্মীয় কাজ ছাড়া কোনও অন্য উদ্দেশ্যে সৌদি আরব ভ্রমণ করবেন না।  

“অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা”: দিলীপ মন্তব্যে বাড়ছে জল্পনা

   

সৌদি প্রশাসনের অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিবছর পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ ভিক্ষুক হজযাত্রী হিসেবে মক্কা-মদিনায় প্রবেশ করেন। সেখানে তাঁরা দেশী-বিদেশী তীর্থযাত্রীদের থেকে জোর করে ভিক্ষা চান। ভিক্ষার এই প্রবণতা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হচ্ছে।

সৌদির মতে, পবিত্র স্থানগুলিতে এমন আচরণ শুধু পর্যটকদের জন্য অস্বস্তির কারণ নয়, বরং এই প্রবণতা ইসলামিক আচরণের বিরোধী। ভিক্ষার নামে দাদাগিরি করার জন্যই রিয়াধ প্রশাসন পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি করতে বাধ্য হয়েছে।

সৌদি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, পাকিস্তানি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রবেশের আগে একটি লিখিত মুচলেকা জমা দিতে হবে। এই মুচলেকায় তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেবেন যে, শুধুমাত্র ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যেই তাঁরা দেশটিতে প্রবেশ করছেন। এর বাইরে কোনো কার্যকলাপ প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সৌদি আরবের এমন সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ভিক্ষুকদের জন্য একটি সার্বভৌম দেশকে এভাবে বিব্রত হতে হলো।

শুধু সৌদি আরব নয়, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য দরজা বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীও। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানি নাগরিকদের আমিরশাহীতে বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে আমিরশাহীও পাকিস্তানের নাগরিকদের ভ্রমণ এবং কাজের ভিসা জারি করতে সতর্ক হচ্ছে। 

মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? ভোটে জিতেও প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন শিন্ডে

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতি তাদের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। একদিকে দেশের অভ্যন্তরে মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব বেড়েছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তান এখন “ভিখারিদের দেশ” তকমা পেতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরব এবং আমিরশাহীর মতো বন্ধুরাষ্ট্রগুলির এমন সিদ্ধান্ত ইসলামাবাদের জন্য বড় ধাক্কা।

সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের জন্য অস্বস্তি তৈরি করেছে। দেশের অভ্যন্তরে এর বিরোধিতা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, হজযাত্রীদের এমন নিয়ম মানতে বাধ্য করা পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের ধর্মীয় আবেগকে আঘাত করতে পারে।

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, কেন সৌদি আরবের মতো একটি মুসলিমপ্রধান দেশ পাকিস্তানের প্রতি এমন কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো? বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু ভিক্ষুকদের কার্যকলাপের জন্য নয়, বরং সামগ্রিকভাবে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক অবস্থান এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের ফলাফল।

ঝাড়খণ্ডে হেমন্তের ধাক্কায় বিচূর্ণ বিজেপি, ধোপে টিকল না ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যু

একসময় পাকিস্তান এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সৌদি আরব এখন পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের মতো বড় অর্থনীতির দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

সৌদির এই নতুন পদক্ষেপে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকতে পারে। পাকিস্তানের পক্ষে সৌদির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।