পরেরবার ৬০-০ করব! ভারতকে হুমকি পাকিস্তানের

পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর (Pakistan) একজন সিনিয়র অফিসার সম্প্রতি একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। ভারতের এই সুনির্দিষ্ট হামলায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর পরিকাঠামোর প্রায় ২০…

Pakistan

পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর (Pakistan) একজন সিনিয়র অফিসার সম্প্রতি একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। ভারতের এই সুনির্দিষ্ট হামলায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর পরিকাঠামোর প্রায় ২০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

এই হামলার পর পাকিস্তানের একজন শীর্ষস্থানীয় বিমান বাহিনী অফিসার দাবি করেছেন যে, “পরের বার আমরা ৬০-০ স্কোর নিশ্চিত করব।” এই মন্তব্য ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।২০২৫ সালের ৭ মে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের সীমান্তের ওপারে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘অপারেশন সিঁদুর ’ পরিচালনা করে।

   

এই হামলা ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে। ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে, এই হামলায় পাকিস্তানের ভোলারি, সারগোধা, রহিম ইয়ার খান, নুর খান, রাফিকি, মুরিদ, সিয়ালকোট এবং জ্যাকবাবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করা হয়েছিল।

এই হামলায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর প্রায় ৫০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ভোলারি ঘাঁটিতে স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ এবং চারজন বিমান সেনাও রয়েছেন। এছাড়া, পাকিস্তানের এফ-১৬ এবং জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

ভারতীয় বিমান বাহিনীর এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী জানিয়েছেন, “আমরা পাকিস্তানের কয়েকটি উচ্চ-প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছি। আমাদের সমস্ত পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন।”

এই হামলার পর পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর একজন সিনিয়র অফিসারের এই বক্তব্য যে তারা “৬০-০ স্কোর” অর্জন করবে, তা অনেকের কাছে অতিরঞ্জিত এবং প্রতিক্রিয়াশীল বলে মনে হয়েছে। এই মন্তব্যকে ভারতীয় সামরিক বিশ্লেষকরা ‘আতঙ্কের প্রকাশ’ এবং ‘প্রতিরক্ষামূলক বড়াই’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আমর প্রীত সিং বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি বড় বিমান ধ্বংস করেছি, যা এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ছিল সর্বাধিক দূরপাল্লার সারফেস-টু-এয়ার হত্যা।”

পাকিস্তানের দিক থেকে, তারা দাবি করেছে যে ভারতীয় হামলায় তাদের কোনো বড় ক্ষতি হয়নি এবং তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে, ভারতীয় কর্মকর্তারা এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন যে তাদের সমস্ত পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন।

পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, “আমাদের একটি বিমানে সামান্য ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু কোনো ভারতীয় পাইলট আমাদের হেফাজতে নেই।” এই পরস্পরবিরোধী দাবিগুলি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে তথ্য যুদ্ধের একটি অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

Advertisements

স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের এই ধরনের বক্তব্য তাদের দেশের জনগণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগানোর একটি প্রচেষ্টা। ‘অপারেশন সিঁদুর ’-এ ভারতের সুনির্দিষ্ট হামলা পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর দুর্বলতাকে প্রকাশ করেছে। সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ নিশ্চিত করেছেন যে ভোলারি ঘাঁটিতে ছয়জন বিমান সেনা নিহত হয়েছেন, যা ভারতের দাবিকে সমর্থন করে।

এছাড়া, ওয়াশিংটন পোস্টের একটি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানের ছয়টি বিমানঘাঁটির তিনটি হ্যাঙ্গার, দুটি রানওয়ে এবং দুটি মোবাইল বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ইঙ্গিত দেয়। পাকিস্তানের এই অফিসারের বক্তব্যকে অনেকে অভ্যন্তরীণ চাপ এবং জনগণের সমর্থন ধরে রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। ভারতীয় সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের হামলাগুলি কেবল জঙ্গি ঘাঁটি এবং সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করেছিল, এবং তারা বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সচেষ্ট ছিল।

এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ‘৬০-০’ দাবি কেবল একটি মানসিক যুদ্ধের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতির কারণে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই ধরনের বক্তব্য উত্তেজনা বাড়িয়ে আরও বড় সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উভয় দেশকে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

এই মুহূর্তে, ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই তাদের নিজস্ব বিজয়ের দাবি করছে। তবে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য এবং পাকিস্তানের ক্ষতির বিষয়ে ভারতের দেওয়া স্যাটেলাইট চিত্র এবং ভিডিও প্রমাণ স্পষ্টভাবে ভারতের পক্ষে রয়েছে। পাকিস্তানের এই অফিসারের বক্তব্যকে সামরিক বিশ্লেষকরা কেবল মুখরক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

GST 2.0-র সৌজন্যে Jawa Yezdi-র বাইকের দাম ১৭,০০০ টাকা হ্রাস পেল, খুশি অসংখ্য ক্রেতা!

এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের সংঘাত এড়াতে উভয় দেশেরই সংযম এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথে এগোনো জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।