অর্থনীতির সাথে নিরাপত্তা সংকট পাকিস্তানের, তালিবান জঙ্গি সংগঠনে যোগ বাংলাদেশিদের

পাকিস্তানের (pakistan) বেসামরিক এবং সামরিক নেতৃত্ব একটি নতুন নিরাপত্তা সংকটের মুখোমুখি, যার উৎস বাংলাদেশ। বাংলাদেশি গণমাধ্যমের একটি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামক জঙ্গি…

pakistan security in denger

পাকিস্তানের (pakistan) বেসামরিক এবং সামরিক নেতৃত্ব একটি নতুন নিরাপত্তা সংকটের মুখোমুখি, যার উৎস বাংলাদেশ। বাংলাদেশি গণমাধ্যমের একটি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামক জঙ্গি সংগঠনে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক যোগ দিচ্ছে।

এই তথ্য প্রকাশ পায় বাংলাদেশের ডিজিটাল আউটলেট ‘দ্য ডিসেন্ট’-এর একটি তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে। এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী উত্তর ওয়াজিরিস্তানে একটি অভিযানে ৫৪ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে, যার মধ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন, যার নাম আহমেদ জোবায়ের। এই ঘটনা পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

   

আহমেদ জোবায়ের এবং টিটিপি 

‘দ্য ডিসেন্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আহমেদ জোবায়ের সৌদি আরবে থাকাকালীন সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সৌদি আরব থেকে আফগানিস্তানে (pakistan)গিয়ে টিটিপি-র সঙ্গে যোগ দেন। তিনি একা নন; প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বর্তমানে কমপক্ষে আটজন বাংলাদেশি নাগরিক আফগানিস্তানে টিটিপি-র সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত।

এছাড়াও, আরও কিছু বাংলাদেশি (pakistan)ডিজিটাল প্রচারণার মাধ্যমে টিটিপি-র সমর্থনে কাজ করছে। এই প্রচারণাগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক মাধ্যমে টিটিপি-র ব্যানারে প্রচার চালানো, যার মধ্যে কিছু অপারেশন সরাসরি আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

সাইফুল্লাহ এবং টিটিপি-র বাংলাদেশ শাখা

টিটিপি-র বাংলাদেশ শাখার সামাজিক মাধ্যম ব্যবস্থাপক সাইফুল্লাহ (ছদ্মনাম) দাবি করেছেন, বর্তমানে আফগানিস্তানে অবস্থানরত কমপক্ষে আটজন বাংলাদেশি টিটিপি-র সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানিয়েছেন, জোবায়ের ছাড়াও আরও দুজন বাংলাদেশি জঙ্গি , আবরার এবং ইবনে তৈমিয়া, পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি এবং ডেরা গাজি খানে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন।

সাইফুল্লাহ বাংলাদেশি দর্শকদের লক্ষ্য করে টিটিপি-র অনলাইন প্রচারণা পরিচালনা করছেন। আশ্চর্যজনকভাবে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই উন্নয়ন সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত বলে জানা গেছে। এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।

বাংলাদেশের চরমপন্থার ইতিহাস

বাংলাদেশে চরমপন্থী সহিংসতার একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ২০০৫ সালে জামায়াত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) দ্বারা পরিচালিত আত্মঘাতী হামলাগুলো দেশে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। এছাড়াও, বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন নাগরিক আইএসআইএস-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যার মধ্যে কিছু সংখ্যক অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন এবং অন্যরা দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।

২০১৬ সালে, সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ আটজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে, যারা আইএসআইএস-এর মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত একটি র‍্যাডিকাল ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছিল। এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের চরমপন্থী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রবণতাকে তুলে ধরে।

Advertisements

অ্যাক্সিস ব্যাংকের নতুন ঘোষণা, ৬ জুন থেকে লাউঞ্জ এক্সেস সুবিধা বাতিল

পাকিস্তানের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ (pakistan)

পাকিস্তানের (pakistan)জন্য এই তথ্য একটি নতুন এবং অপ্রত্যাশিত মাত্রা যোগ করেছে। টিটিপি ইতিমধ্যেই তালিবানের সঙ্গে তাদের মতাদর্শগত এবং লজিস্টিক সম্পর্কের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়েছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়োগ এই সংগঠনের আন্তর্জাতিক নিয়োগ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়, যা পাকিস্তানের গোয়েন্দা এবং সামরিক বাহিনীর জন্য সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও জটিল করে তুলছে।

পাকিস্তানের (pakistan)প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকার ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি। টিটিপি-তে বাংলাদেশিদের যোগদান একটি রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি নতুন এবং বিপজ্জনক পর্যায়ের সূচনা করছে, যা এখন আর জাতীয় সীমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগ

বাংলাদেশি যুবকদের টিটিপি-তে যোগদান বাংলাদেশের জন্যও একটি গুরুতর উদ্বেগ। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, টিটিপি যে যুক্তিতে পাকিস্তানকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ এবং কাফের রাষ্ট্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে হামলা চালায়, একই যুক্তিতে বাংলাদেশও তাদের জন্য একটি লক্ষ্য হতে পারে। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা ব্যবস্থার দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করে।

টিটিপি-তে বাংলাদেশি নাগরিকদের যোগদান পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ উভয়ের জন্য একটি গুরুতর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ। আহমেদ জোবায়েরের মৃত্যু এবং সাইফুল্লাহর মতো ব্যক্তিদের সক্রিয় ভূমিকা এই সংগঠনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলির অজ্ঞতা এই সমস্যার গভীরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই পরিস্থিতি পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার জন্য উভয় দেশের গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News