ইসলামাবাদ: আফগানিস্তানের সঙ্গে অস্থায়ী সংঘর্ষবিরতির মধ্যেই ফের রক্তাক্ত হল পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চল। শুক্রবার ভোরে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তান সেনার একটি ঘাঁটিকে নিশানা করে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি সরাসরি ঘাঁটির প্রাচীরে ধাক্কা মারে৷ সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলেই সাত জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত তেরো জন।
সন্দেহ তালিবানের দিকে
ঘটনার দায় স্বীকার না করলেও, সীমান্ত অঞ্চলে সক্রিয় তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীকেই সন্দেহ করছে ইসলামাবাদ। নিরাপত্তা সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার মুহূর্তে আরও তিন জন সশস্ত্র জঙ্গি ঘাঁটিতে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল, তবে পাক সেনার গুলিতে তারা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
পাকিস্তানের সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজ দাবি করেছে, ‘‘আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের বাহিনীর কেউ হতাহত হয়নি।’’ তবে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এর সূত্র বলছে, নিহত ও আহত সেনাদের সংখ্যা সরকার যে স্বীকার করছে তার চেয়ে অনেক বেশি।
সংঘর্ষবিরতির মধ্যেই হামলা Pakistan Army base hit ceasefire
এই হামলার সময়টিই বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, মাত্র দু’দিন আগেই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। শুক্রবার সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ফের সীমান্তে বিস্ফোরণ ঘটল।
ইসলামাবাদ অভিযোগ তুলেছে, আফগানিস্তানের ভেতর থেকে পরিচালিত এই হামলার পেছনে রয়েছে স্থানীয় তালিবান নেটওয়ার্ক এবং তাদের পরোক্ষ মদত দিচ্ছে ভারত। যদিও নয়াদিল্লি তীব্রভাবে সেই দাবি অস্বীকার করেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, “সন্ত্রাসবাদকে লালন-পালন করা পাকিস্তানের অভ্যেস; নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে প্রতিবেশীদের অভিযুক্ত করা তাদের পুরনো কৌশল।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা শুধু সীমান্ত নিরাপত্তা নয়, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার দিকেও বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সংঘর্ষবিরতির মুখে এমন হামলা প্রমাণ করছে, দক্ষিণ এশিয়ার ‘সন্ত্রাসের করিডর’-এ শান্তি এখনও বহুদূরের স্বপ্ন।