কাঠমান্ডু: নেপালের তেরাই অঞ্চলে সাম্প্রতিককালে মসজিদ ও মাদ্রাসার সংখ্যা (Foreign-funded mosque construction)বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এক নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশি মুসলিম সংগঠনগুলো বিদেশি তহবিলের সাহায্যে মসজিদ নির্মাণ করে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যা দেশটির ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ভারসাম্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। সানসারি জেলার ইনারাওয়া এলাকায় ‘রাজ্জাক মসজিদ’ নির্মাণের ঘটনা এই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, এই কাজের পিছনে বাংলাদেশি এনজিও ‘আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন’ (এএসএইচ ফাউন্ডেশন) ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করছে, এবং অনেক অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় আধার কার্ডের পাশাপাশি নেপালি ভোটার আইডি অর্জন করে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা নিচ্ছে। এই ঘটনা নেপালের সামাজিক মিলনের ভিত্তিকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে, এবং স্থানীয়রা জাতীয় নাগরিক রেজিস্টার (এনআরসি) এবং তদন্তের দাবি জানাচ্ছে।
ভারতের বিরুদ্ধে নয়া পদক্ষেপ! জৈশ প্রধানের বিস্ফোরক ঘোষণা
এএসএইচ ফাউন্ডেশন ২০২২ সালে বাংলাদেশে তৈরী হয়েছিল। এরা নিজেকে একটি মানবিক সংস্থা হিসেবে দাবি করে। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, এর প্রধান মুহাম্মদ নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে সংগঠনটি নেপালে ইসলাম প্রচারের (দাওয়াহ) উদ্দেশ্যে কাজ করছে। জুলাই মাসে ফেসবুকে একটি পোস্টে তারা রাজ্জাক মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা করে, এবং বাংলাদেশি মুসলিমদের কাছে দানের আহ্বান জানায়। “নেপাল বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু রাষ্ট্রগুলোর একটি।
এখানে দাওয়াহের বিশাল সুযোগ রয়েছে। আমাদের ধর্মের মূল নীতি হলো মানুষকে আল্লাহর পথে আমন্ত্রণ জানানো,” উদ্দিনের ভাইরাল ভিডিওতে বলা হয়েছে। সানসারিতে মাত্র ৫% মুসলিম জনসংখ্যা থাকলেও, এই মসজিদটি ১৫% জনগণের মধ্যে ইসলাম ছড়ানোর কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে বলে তারা দাবি করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এর পিছনে পাকিস্তানের আইএসআই, তুরস্কের মত দেশগুলোর সমর্থন রয়েছে, যা মসজিদগুলোকে জিহাদি নেটওয়ার্কের লজিস্টিক হাবে পরিণত করতে পারে।
এই সংগঠনের পরিকল্পনা শুধু সানসারিতে সীমাবদ্ধ নয়। ধানুষা জেলায়ও একাধিক মসজিদের সম্প্রসারণের পরিকল্পনা চলছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। ধানুষা, যেখানে হিন্দু জনসংখ্যা প্রায় ৮০% এবং মুসলিম মাত্র ৮.৪%, সেখানে নতুন মাদ্রাসা এবং মসজিদ নির্মাণের খবর উঠেছে। বাংলাদেশি এবং ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা এই কাজে জড়িত বলে অভিযোগ।
অনেকে ভারতের আধার কার্ড বহন করলেও নেপালি ভোটার আইডি এবং নাগরিকত্ব অর্জন করেছে, যা দ্বৈত নাগরিকত্বের অপব্যবহার। নেপালের আইন দ্বৈত নাগরিকত্বকে সীমিতভাবে অনুমোদন করে, কিন্তু সীমান্তবর্তী এলাকায় এর অপব্যবহার বেড়েছে।
রৌতাহাট, কপিলবস্তু, বাঁকে, বারা, পার্সা, মহোত্তরী, রূপন্ধি, ধানুষা এবং সারলাহি জেলায় মুসলিম জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, এবং স্থানীয় নির্বাচনে তারা প্রভাব বিস্তার করছে। ২০১১ সেন্সাস অনুসারে, নেপালে মুসলিম জনসংখ্যা ৪.৪%, কিন্তু তেরাই অঞ্চলে ৯৫% মুসলিম বসবাস করে, যা ভারত-নেপাল সীমান্তের কৌশলগত গুরুত্ব বাড়ায়।
