কাঠমান্ডু: রক্তক্ষয়ী আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ইতিহাস গড়ল নেপালের (Nepal) জেন জি। শুক্রবার নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি (Sushila Karki)। রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ রাষ্ট্রপতি ভবনে নেপাল সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুশীলা কারকিকে শপথ পাঠ করালেন রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল।
নেপালের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মহিলা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বভার সামলাবেন। নেপালের ক্ষমতার পালাবদলে গোড়া থেকেই দূরত্ব বজায় রেখে আন্দোলনকারী জেন জি-এর উদ্দেশ্যে মানবিক বার্তা দিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি। তবে বাংলাদেশের মত পরিস্থিতি এড়াতে নেপালের সেনাপ্রধানের সঙ্গে ‘ট্র্যাক টু’ আলোচনায় ছিল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনো করা সুশীলা কারকি অলি বা দেউবার মত জাতীয়তাবাদী মনোভাব পোষণ করেন না কারকি। বরং, ভারতের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে বলে একাধিকবার উল্লেখ করেছেন নেপালের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার-প্রধান।
নরেন্দ্র মোদীর বার্তা
নেপালের নতুন সূর্যোদয়কে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান সুশীলা কারকিকে আমার অভ্যর্থনা। আমি আশা রাখছি, তিনি নেপালের শান্তি, উন্নতি এবং মানুষের সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবেন”। বলা বাহুল্য, নেপালের সঙ্গে ভারতের “রুটি, বেটির সম্পর্ক” বলে একাধিকবার উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পাশাপাশি, গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও বলা হয়, “প্রতিবেশী এবং বহু দিনের ব্যবসায়িক বন্ধু নেপালের সঙ্গে দুই দেশের মানুষের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী দিনে নেপালের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা রাখে ভারত”।
শপথ গ্রহণে কি হল?
রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের কাছে “দেশ কে রক্ষা করার” শপথ পাঠের পরেই প্রথম ক্যাবিনেট মিটিং-এ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেন সুশীলা কারকি। ২০২৬ এর ৪ মার্চ নেপালের নির্বাচনের তারিখ ধার্য হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্ধারণ করবে নেপাল।
তবে পুরোনো মন্ত্রীসভা ভেঙে দিতে নারাজ কমিউনিস্ট, মাওবাদী এবং নেপাল কংগ্রেস। শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কার্যত বয়কট করে সংসদের দুই কক্ষের শীর্ষরা। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে আমন্ত্রণ পাঠানো সত্ত্বেও কারকির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে এবং জাতীয় পরিষদ চেয়ারম্যান নারায়ণ দাহাল।