Ukrainian Drone Attack: মস্কোতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা, বহু ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

মস্কোকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি ‘বিশাল’ ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, যা মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন টেলিগ্রামে জানিয়েছেন। এই হামলায় মস্কোর…

Moscow Targeted by Massive Ukrainian Drone Attack, Says Mayor

মস্কোকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি ‘বিশাল’ ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, যা মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন টেলিগ্রামে জানিয়েছেন। এই হামলায় মস্কোর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যক্রম চালিয়ে ৫৮টি শত্রু ড্রোন আকাশে বিধ্বস্ত করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

“ডিফেন্স মন্ত্রকের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মস্কোর ওপর শত্রু ড্রোনের বিশাল আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে,” সোবিয়ানিন তার টেলিগ্রাম পোস্টে লিখেছেন। তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত ৫৮টি শত্রু ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। যেখানে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়েছে, সেখানে জরুরি পরিষেবা বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।”

এই হামলা ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরের মস্কো শহরে ঘটেছে, যা রাশিয়ার জন্য একটি বড় নিরাপত্তা বিপর্যয়ের সংকেত। এই হামলার ঠিক আগের দিন, মঙ্গলবার, সৌদি আরবে ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এই বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেন তার সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি আংশিক যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে চায়, যাতে রাশিয়ার সঙ্গে সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠিত করা যায়।

যুদ্ধের তিন বছর পার হওয়ার পর, ইউক্রেনের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইউক্রেন আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে থাকার জন্য এই শান্তি প্রস্তাবকে সমর্থন করবে। তবে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কিছু কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছিল, যা ইউক্রেনের জন্য একটি চাপের সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্প তার সময়ে ইউক্রেনকে কিছু কনসেশন প্রদান করার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা ইউক্রেনের জন্য একধরনের রাজনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

গত মাসে হোয়াইট হাউসে এক অপ্রত্যাশিত বৈঠকের সময়, ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছিলেন। এই বৈঠকে তিনি জেলেনস্কির প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রদর্শন করেছিলেন, যা পরে ইউক্রেনের রাজনীতিতে এক ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করে। জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের এই অস্বাভাবিক আচরণের পর, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি ও স্যাটেলাইট চিত্রের অ্যাক্সেসও স্থগিত করেছে। এটি এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে যাতে ইউক্রেনকে শান্তির টেবিলে আনা যায়।

Advertisements

এই পরিস্থিতি ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত কঠিন, কারণ তার প্রধান আন্তর্জাতিক সমর্থক দেশ যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের সহায়তা প্রত্যাহার করেছে। এমনকি যুদ্ধের আগে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে আর দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে ইউক্রেনের সামরিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রামে।

এদিকে, ইউক্রেনের জন্য এই নতুন পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্মুখীন হওয়া চ্যালেঞ্জগুলো আরও তীব্র হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মস্কোতে এই হামলা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি বার্তা হতে পারে যে, তারা যুদ্ধের টেবিলে বসতে প্রস্তুত, তবে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান কঠোর থাকবে।

এই হামলা, যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা এবং মার্কিন প্রশাসনের পরিবর্তিত অবস্থান ইউক্রেনের ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে পারে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আশা করছেন, আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে দিয়ে তারা রাশিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হবে, যাতে যুদ্ধের ক্ষতি কমানো যায়।