কলকাতা: মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে শান্তির সুর শোনা যাচ্ছে নতুনভাবে। গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রক্রিয়ার উদীয়মান কাঠামোকে ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতি ঘটেছে। শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগকে প্রকাশ্যে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “গাজায় শান্তি প্রচেষ্টা এখন সিদ্ধান্তমূলক অগ্রগতির পথে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বকে আমরা স্বাগত জানাই। বন্দিমুক্তির ইঙ্গিত নিঃসন্দেহে একটি বড় পদক্ষেপ।”
ভারতের ঐতিহ্যগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মোদী আরও বলেন, “একটি ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই শান্তির জন্য ভারত সবসময় সমস্ত উদ্যোগকে সমর্থন করবে।” মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ও পুনর্মিলনের গুরুত্বও তিনি বিশেষভাবে তুলে ধরেন।
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
ভারত–আমেরিকা সম্পর্কে সাম্প্রতিক সময়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে বাণিজ্য নীতিকে ঘিরে। গত অগস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতীয় রপ্তানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন। বাণিজ্য ঘাটতি ও ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়ান তেল আমদানিকে তিনি তার কারণ হিসেবে দেখান। নয়াদিল্লি অবশ্য সেই পদক্ষেপকে “অন্যায্য” ও “অযুক্তিসঙ্গত” বলে কড়া সমালোচনা করেছে।
তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উষ্ণতা ফেরানোর লক্ষণও স্পষ্ট। সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প মোদীকে সরাসরি ফোন করে তাঁর ৭৫তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান। মোদী প্রকাশ্যে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও মজবুত করার বার্তা দেন। আর চলতি অক্টোবরের শুরুতেই ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ মোদীর গাজা শান্তি-সমর্থন বার্তা রিপোস্ট করেন, যা ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
হামাসের ঘোষণা ও বিশ্ব প্রতিক্রিয়া Modi welcomes Trump’s Gaza peace plan
শুক্রবার হামাস ঘোষণা করে, তারা সমস্ত ইসরায়েলি বন্দিকে—মৃত বা জীবিত—মুক্তি দিতে প্রস্তুত। সেই সঙ্গে ট্রাম্প-সমর্থিত শান্তি কাঠামোর কিছু অংশ মেনে নেওয়ার ইঙ্গিতও দেয় সংগঠনটি। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তাত্ক্ষণিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে তারা। বিশ্ব মহলে এই ঘোষণাকে ঘিরে সতর্ক আশাবাদ ফুটে উঠেছে।
কানাডা হামাসের অঙ্গীকারকে “গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে। পাশাপাশি দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
রাষ্ট্রসংঘ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।
ফ্রান্স থেকে কাতার—বেশ কয়েকটি দেশ সতর্ক ভঙ্গিতে ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে আস্থা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে প্রক্রিয়া এগোনো জরুরি বলে মনে করিয়েছে তারা।