ম্যানহাটনে বন্দুকবাজের হামলা: NYPD অফিসার-সহ নিহত ৪

নিউ ইয়র্ক: বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত শহর নিউ ইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র Midtown Manhattan-এ সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে গেল এক রক্তক্ষয়ী হামলা। Park Avenue ও East 51st Street-এর মোড়ে,…

midtown manhattan shooting

নিউ ইয়র্ক: বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত শহর নিউ ইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র Midtown Manhattan-এ সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে গেল এক রক্তক্ষয়ী হামলা। Park Avenue ও East 51st Street-এর মোড়ে, শহরের অভিজাত বাণিজ্য জোনে এক বন্দুকবাজ এলোপাথাড়ি গুলি চালায়, যাতে মৃত্যু হয় অন্তত চারজনের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (NYPD) এক অফিসার। পুলিশের জবাবি অভিযানে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় হামলাকারী।

ওই ভবনে রয়েছে একাধিক দফতর

ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক ভবনে, যেখানে অবস্থিত জাতীয় ফুটবল লিগ (NFL)-এর সদর দপ্তর, এবং একইসঙ্গে ব্ল্যাকস্টোন, কোলগেট-পামোলিভ, KPMG-র মতো বহু আন্তর্জাতিক কর্পোরেট সংস্থার দপ্তর। সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট নাগাদ গুলির আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ও জরুরি পরিষেবার বাহিনী চতুর্দিক ঘিরে ফেলে। আকাশে চক্কর দিতে শুরু করে হেলিকপ্টার।

   

পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানিয়েছেন, “ঘটনাস্থল সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং হামলাকারীকে ঘটনাস্থলেই নিকেষ করা হয়েছে।”

পরিচয় মিলেছে হামলাকারীর

নিহত বন্দুকবাজের নাম শনাক্ত হয়েছে, শেন তামুরা (Shane Tamura), বয়স ২৭, নেভাডার বাসিন্দা। এফবিআই এবং এনওয়াইপিডির যৌথ তদন্তে জানা গিয়েছে, সে একাই হামলা চালায়। তার সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের সরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি, তবে মানসিক স্বাস্থ্যের ইতিহাস ও সম্ভাব্য উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মেয়রের প্রতিক্রিয়া ও নাগরিকদের সতর্কতা

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এক ভিডিও বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন,
“একজন সাহসী পুলিশ অফিসারের মৃত্যু আমাদের সকলের হৃদয় বিদীর্ণ করেছে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা ও তদন্তে প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।”

তাঁর বার্তায় আরও বলা হয়, “এই মুহূর্তে নিউ ইয়র্কবাসীদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কেউ যেন Park Avenue ও আশেপাশের এলাকায় অহেতুক যাতায়াত না করেন।”

Advertisements

ব্যবসায়িক এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ও চ্যালেঞ্জ

যেখানে হামলাটি হয়েছে, সেই এলাকা নিউ ইয়র্ক শহরের অন্যতম সুরক্ষিত কর্পোরেট করিডর। বহুজাতিক কোম্পানির সদর দপ্তর, বিলাসবহুল ফাইভ-স্টার হোটেল ও ব্যাংক সদর—এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রে সুরক্ষাব্যবস্থার মধ্যেই কীভাবে বন্দুকধারী প্রবেশ করল, তা ঘিরে প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়েই।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা শুধু নিরাপত্তার ত্রুটি নয়—এটি এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক সংকেত, যা আধুনিক শহরের নিরাপত্তা কাঠামো ও নাগরিক মানসিকতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।

তদন্তে এফবিআই, প্রশ্নের মুখে সিস্টেম

এফবিআই, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও এনওয়াইপিডি যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। হামলার পরিকল্পনা, আগাম কোনো বার্তা বা অনলাইন সক্রিয়তা ছিল কিনা, সেই সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এখনও পর্যন্ত আহতদের মধ্যে অন্তত তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা।