মাওবাদীদের সভা বাংলাদেশে! লিফলেট বিলিয়ে এমনই জানানো হয়েছে। তীব্র রাজনৈতিক ডামাডোলের মাঝে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য। জানা গেছে, এই সমাবেশের মূল লক্ষ্য ভারতীয় মাওবাদী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকাকালীন নিহত বাসভরাজের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।
বাংলাদেশি মাওবাদীদের প্রকাশ্য সমাবেশটির আহ্বান করেছেন হাসান ফকরী। এই আহ্বান পত্রে লেখা আছে, সভাটি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার তোপখানা রোডের শিশুকল্যান মিলনায়তনে। মাওবাদী ঘনিষ্ঠ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে এই আহ্বানপত্র।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে যৌথ বাহিনি অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভারতীয় মাওবাদী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বাসভরাজের ( নাম্বালা কেশব রাও) মৃত্যু হয় ছত্তিসগড়ে। তার মৃত্যুর পর একাধিক দেশের মাওবাদী সংগঠনগুলো শোক জ্ঞাপন করেছে। ভারতেও নকশালপন্থী রাজনৈতিক দল শোক জানায়।
বাসভরাজের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত। তার নেতৃত্বে ভারতের মাওবাদী সংগঠন ছত্তিসগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা হয়ে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের একাংশে ছড়িয়ে। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে একাধিক গণহত্যা ও নাশকতায় জড়িত মাওবাদীরা।
বাংলাদেশি মাওবাদী সহানুভূতিশীলদের প্রচারিত লিফলেটে বলা হয়েছে,”ভারতে ‘অপারেশন কাগার’ ও মাওবাদী-আদিবাসী হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা।” আরও লেখা হয়েছে, অবিলম্বে ভারতে চলমান “অপারেশন কাগার”সহ সকল সামরিক অভিযান ও গণহত্যা বন্ধ কর!”
বাংলাদেশি মাওবাদী প্রচারপত্রে আরও লেখা আছে, “ভারত রাষ্ট্র সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানিগুলোর স্বার্থে মাওবাদীদের নেতৃত্বে নিপীড়িত জনগণের বিপ্লবী সংগ্রাম ধ্বংস করতে বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে।”
প্রচারপত্রে লেখা “মাওবাদীদের পরিচালিত মুক্ত অঞ্চলগুলো, বিশেষত ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের খনিজ-সম্পদে সমৃদ্ধ এলাকাগুলো থেকে জনগণকে উচ্ছেদ করা ও নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে “অবুজ মাড়” এলাকাকে কেন্দ্র করে গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে বর্বরতম সামরিক অভিযান “অপারেশন কাগার” চালিয়ে আসছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিতশাহ ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মাওবাদ-মুক্ত ভারত প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দিয়েছে। বিমান হামলা, ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। বিপ্লবী, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের যারাই হিন্দুত্ববাদী শাসকদের গণবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদেরকেই “কলমধারী” মাওবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর দমন-নির্যাতন চালাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় রাষ্ট্রযন্ত্র নিজ দেশের শোষিত দরিদ্র জনগণ ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কায়েম করেছে এক বর্বরতার রাজত্ব। ভারত রাষ্ট্রের এই বর্বরতা-গণহত্যা ফিলিস্তিন, ইরান, সিরিয়া, ইউক্রেনসহ বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদীদের নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত অন্যায় যুদ্ধ ও গণহত্যা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, বরং তারই আর একটা ক্ষেত্র, ধারাবাহিকতার অংশ।”