আর্থিক অনটন, পেটের জ্বালায় দেহ ব্যবসায় নেমেছেন নার্স-মহিলা ডাক্তারেরা

কয়েক বছর ধরে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি চলছে এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করেছে, সেখানে সমাজের এক বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়েছে মায়ানমারে (Myanmer)। সামরিক অভ্যুত্থানের পর,…

Lady Doctors and Nurses are doing unpleasent business to run family in Myanmer

কয়েক বছর ধরে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি চলছে এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করেছে, সেখানে সমাজের এক বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়েছে মায়ানমারে (Myanmer)। সামরিক অভ্যুত্থানের পর, দেশের আর্থিক কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা একেবারে সংকটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনের রুটি-রুজির জন্য নানা ধরনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে সেই সব মহিলারা, যারা কখনও ভাবেননি তাদের জীবন এভাবে বাঁক নিবে। 

প্রধানমন্ত্রী মেলোনিকে জড়িয়ে চুমু খাচ্ছেন মাস্ক, ভাইরাল ভিডিও

   

একটি বিশেষ গোষ্ঠী, যাদের মধ্যে বেশ কিছু মহিলা চিকিৎসক, নার্স, শিক্ষিকা এবং অন্য পেশাজীবী নারীরা অন্তর্ভুক্ত, বাধ্য হয়ে মানবিক সংকটের মুখে দেহব্যবসার মতো অসম্মানজনক কাজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। অধিকাংশই এই পথটি বেছে নিচ্ছেন শুধুমাত্র পেটের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে, কারণ তাঁদের আয়ের কোন উপায়ই অবশিষ্ট নেই। কখনো কখনো, এই মহিলাদের জন্য সব চেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, তাদের সন্তানদের জন্য খাবার যোগাড় করা এবং তাদের একটি নিরাপদ জীবন উপহার দেওয়া।

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত তিন-চার বছরে মায়ানমারে যৌনকর্মীর সংখ্যা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই বলেন, “এটা আমাদের জীবনের শেষ উপায়, কারণ অন্য কোন পেশায় আর সঞ্চয়ের পথ নেই।” মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি, যেখানে কোনো অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ ক্রমশ কমে যাচ্ছে, সেখানকার নারীরা চরম দারিদ্র্যের মুখে পড়ে এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

মার্কিন রক্তচক্ষু উপেক্ষা, কিমের দেশে দূতাবাস খুলছে ভারত, তুঙ্গে তৎপরতা

তাদের মধ্যে যেসব নারীরা আগে চিকিৎসক বা নার্স হিসেবে কাজ করতেন, তাদের অনেকেই এখন নিজের পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। বহু নারী নিজেদের কাছে থাকা পেশাগত দক্ষতাকে অস্বীকার করে একসময় যে কাজটিকে ঘৃণা করতেন, আজ সেটি তাদের জীবনের একমাত্র বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকটের মধ্যে, সমাজের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও নিজেদের অবস্থান হারাচ্ছেন, এবং নারী সমাজের জন্য এটি একটি ভয়াবহ সংকেত।

মায়ানমারের সামরিক সরকার, যা দেশটির শাসনক্ষমতা দখল করেছে, এর বিরুদ্ধে কার্যত কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সরকারের নজর নেই জনগণের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি, বরং তারা নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মনোনিবেশ করেছে। এমনকি মানবাধিকার সংস্থাগুলোও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুললেও, তাতে কোনো পরিবর্তন আসছে না। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে, নাগরিকদের জীবনে বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এক ধরনের সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’! কানাডার পর এবার খালিস্তান ইস্যুতে ভারতকে বিঁধল ব্রিটেন

মায়ানমারের এই পরিস্থিতি শুধু দেশটির জন্যই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের মতো দেশগুলোর জন্য এটা উদ্বেগের বিষয়, কারণ তাদের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এমন বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে পারে। এর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সমাজও এই সংকট সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে অক্ষম হয়ে পড়ছে।

এই পরিস্থিতি শুধু মায়ানমারের জন্যই নয়, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকটের এক মর্মান্তিক উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটির সাধারণ জনগণের উপর এই অভ্যুত্থান ও তার পরবর্তী পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে তাদের জীবনে, যেখানে প্রতিটি মানুষ নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।