ওয়াশিংটন: আমেরিকার রাজনীতিতে বড়সড় আলোড়ন তুলতে চলেছে প্রাক্তন সহ-রাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের আসন্ন স্মৃতিকথা। দীর্ঘদিনের আস্থা ও আনুগত্য ভেঙে তিনি প্রথমবার প্রকাশ্যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তুললেন তীব্র সমালোচনা। তাঁর অভিযোগ, ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত বাইডেন নিয়েছিলেন দেশ বা দলের স্বার্থে নয়, বরং ব্যক্তিগত অহংকার আর উচ্চাকাঙ্ক্ষার বশে।
‘এটা জো আর জিলের সিদ্ধান্ত’
দ্য আটলান্টিক-এ প্রকাশিত অংশে হ্যারিস লিখেছেন, বাইডেনকে ঘিরে ডেমোক্র্যাট শিবিরের মধ্যে যেন এক অদ্ভুত মন্ত্র ছড়িয়ে পড়েছিল, “এটা জো আর জিলের সিদ্ধান্ত”। তাঁর ভাষায়, “আমরা সবাই যেন সম্মোহিতের মতো সেই বাক্য আওড়াতাম। তখন মনে হতো, হয়তো এটা সৌজন্য। কিন্তু এখন ফিরে তাকালে স্পষ্ট, ওটা ছিল বেপরোয়া সিদ্ধান্ত।”
হ্যারিসের মতে, উপ-রাষ্ট্রপতির পদে থেকে তাঁর পক্ষে বাইডেনকে নিরুৎসাহিত করা প্রায় অসম্ভব ছিল। “আমি যদি বলতাম, প্রার্থী হবেন না, তাহলে ওটা মনে হতো স্বার্থপর উচ্চাকাঙ্ক্ষা, হয়তো বিশ্বাসঘাতকতাও। অথচ আসল বার্তাটা ছিল একটাই, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফিরতে দেবেন না৷”
হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরের দ্বন্দ্ব Kamala Harris memoir
‘১০৭ ডেজ’ নামের বইটিতে আরও উন্মোচিত হয়েছে হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরের দ্বন্দ্ব। হ্যারিসের দাবি, বাইডেনের ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতারা ইচ্ছে করেই তাঁকে আড়ালে রেখেছিলেন, তাঁর সাফল্যকে কখনও সামনে আনতে চাননি। “তাদের ভাবনা ছিল শূন্য-সমীকরণ: আমি যদি আলোয় আসি, তাহলে বাইডেন ম্লান হয়ে যাবেন। অথচ তাঁর বয়স নিয়ে যেহেতু প্রশ্ন ছিল, আমার দৃশ্যমান সাফল্যই হতে পারত তাঁর বিচক্ষণতার প্রমাণ, দেশের জন্য আস্থার বার্তা।”
তবে বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে তিনি কোনও বড় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলতে নারাজ। বরং তাঁর স্বীকারোক্তি, “জো ছিলেন বুদ্ধিমান, অভিজ্ঞ, নীতিগতভাবে দৃঢ়। কিন্তু ৮১ বছরে ক্লান্তি তাঁকে ছাপিয়ে যেত, আর তখনই কথায় বা চলাফেরায় তাঁর বয়স ধরা পড়ত।”
বিতর্কিত টেলিভিশন ডিবেটের পর অবশেষে জুলাই ২০২৪-এ বাইডেন সরে দাঁড়ান পুনর্নির্বাচন দৌড় থেকে। মাত্র ১০৭ দিনে জাতীয় প্রচারাভিযান চালিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন হ্যারিস, যদিও নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজিত হন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে।
এরপর থেকে রাজনীতির মঞ্চে তুলনামূলকভাবে নীরব হ্যারিস। এ বছরের জুলাইতে ঘোষণা করেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদেও তিনি লড়বেন না। তবে তাঁর স্মৃতিকথা প্রকাশের আগেই যে ডেমোক্র্যাট অন্দরে নতুন বিতর্কের আগুন জ্বালাবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত।
World: In a new memoir, Kamala Harris alleges Joe Biden’s decision to seek re-election in 2024 was motivated by personal ambition, not national interest. The book, “107 Days,” reveals deep-seated tensions and accusations of being sidelined by the Biden administration.