দামাস্কাসের কাছে যাফুরে ইসরায়েলি বাহিনীর ঐতিহাসিক অভিযান

ইসরায়েলি বাহিনী (Israeli Force) সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যাফুর শহরে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এটি ইসরায়েলি সৈন্যদের সিরিয়ার রাজধানীর সবচেয়ে…

Israeli Force attack in syria

ইসরায়েলি বাহিনী (Israeli Force) সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যাফুর শহরে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এটি ইসরায়েলি সৈন্যদের সিরিয়ার রাজধানীর সবচেয়ে কাছাকাছি অভিযান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইজরায়েলের এই অভিযান মধ্য প্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।

এই অভিযানটি সিরিয়ার (Israeli Force) অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, যা এই অঞ্চলের জটিল রাজনৈতিক সমীকরণকে আরও জটিল করে তুলেছে।মধ্যপ্রাচ্য মনিটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনী তিনটি হেলিকপ্টারের সাহায্যে যাফুরে একটি এয়ারড্রপ অভিযান পরিচালনা করে।

   

এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল আসাদ শাসনামলে সিরিয়ার রিপাবলিকান গার্ডের অধীনে থাকা একটি সামরিক স্থাপনা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কমান্ডোরা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে এই স্থানে তল্লাশি চালিয়ে হেলিকপ্টারে করে এলাকা ত্যাগ করে। এই অভিযানটি ছিল এই অঞ্চলে ইসরায়েলের প্রথম ধরনের সামরিক হস্তক্ষেপ, যা সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

এই অভিযানটি সিরিয়ার (Israeli Force) সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পটভূমিতে ঘটেছে। গত ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট বশর আল-আসাদের শাসনের পতনের পর সিরিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইসরায়েল সিরিয়ার অভ্যন্তরে তাদের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে। আল মায়াদিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী যাফুরে তিনটি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে এই অভিযান চালিয়েছে, যা সিরিয়ার সাবেক রিপাবলিকান গার্ডের একটি স্থাপনাকে লক্ষ্য করেছিল।

ইসরায়েলের (Israeli Force) এই অভিযানের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে তাদের নিরাপত্তা উদ্বেগ, বিশেষ করে ইরান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপ রোধ করা। এফডিডি’র লং ওয়ার জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সম্প্রতি সিরিয়ায় ইরান-পরিচালিত একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে।

এই অভিযানগুলি সিরিয়ার (Israeli Force) দক্ষিণাঞ্চলে হুমকি নিরসনের জন্য ইসরায়েলের ক্রমাগত প্রচেষ্টার অংশ। এই প্রেক্ষাপটে, যাফুরে অভিযানটি ইসরায়েলের কৌশলগত লক্ষ্যের একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যার মাধ্যমে তারা সিরিয়ার অভ্যন্তরে ইরানের প্রভাব কমাতে চাইছে।

সিরিয়ার (Israeli Force) সরকার এই অভিযানের তীব্র নিন্দা করেছে। সিরিয়ার বিদেশ মন্ত্রণালয় এটিকে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের “উল্লেখযোগ্য লঙ্ঘন” হিসেবে অভিহিত করেছে এবং রাষ্ট্র সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “কঠোর পদক্ষেপ” নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়াও, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় গত জুনে দক্ষিণ সিরিয়ায় ইসরায়েলি অভিযানের সমালোচনা করে বলেছে, এতে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং সাতজনকে অপহরণ করা হয়েছে।

এই ঘটনা সিরিয়ার (Israeli Force) বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আরও জটিলতা যোগ করেছে। আসাদ শাসনের পতনের পর সিরিয়ায় ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, যা ইসরায়েলের মতো বাহ্যিক শক্তিগুলির জন্য সুযোগ তৈরি করেছে।

Advertisements

এক্স-এ প্রকাশিত পোস্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি সৈন্যরা দামেস্কের ১৫-২৫ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিল, এবং সিরিয়ার নতুন নেতৃত্ব, আল-জুলানির নেতৃত্বাধীন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস), কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই ইসরায়েলি অগ্রগতির অনুমতি দিয়েছে।

এই পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, (Israeli Force) সিরিয়ার বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে ইসরায়েলের কিছু নীরব সমঝোতা থাকতে পারে, যা আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে।ইসরায়েলের এই অভিযানের পেছনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো গোলান হাইটসের কৌশলগত গুরুত্ব। মিজান অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েল সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্ত হিসেবে গোলান হাইটসের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার কথা বলেছে।

এই অঞ্চলটি সিরিয়া, লেবানন এবং ইসরায়েলের উপর নজরদারি এবং পানি সম্পদের অ্যাক্সেসের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার এই সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের সম্ভাবনাকে স্বাগত জানালেও গোলান হাইটসের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার শর্ত আরোপ করেছেন।

এই অভিযানটি আঞ্চলিক শক্তি ভারসাম্যের উপরও প্রভাব ফেলছে। ইরান এবং হিজবুল্লাহর মতো ইসরায়েল-বিরোধী শক্তিগুলি সিরিয়ায় দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা ইসরায়েলকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির আলোচনা চলছে বলেও প্রতিবেদন রয়েছে, যা ২০২৫-এর শেষ নাগাদ সম্পন্ন হতে পারে।

শিশুর জন্মে নতুন দিশা, নাড়ি না কেটেই প্রসব সফল

এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ইসরায়েলের যাফুরে অভিযান কেবল সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাকেই প্রকাশ করেনি, বরং আঞ্চলিক শক্তিগুলির মধ্যে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়েছে। এই অভিযানের ফলাফল এবং এর পরবর্তী প্রভাব সিরিয়া এবং ইসরায়েলের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।