হিজবুল্লাহ-ইজরায়েলের রকেট যুদ্ধের আশঙ্কা, স্তব্ধ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান পথ

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: কয়েকদিন তীব্র উদ্বেগে আতঙ্কে ছিলাম। বাংলাদেশে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভের কারণে আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। কী হয় কী হয় এমনই অস্থির অবস্থা…

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: কয়েকদিন তীব্র উদ্বেগে আতঙ্কে ছিলাম। বাংলাদেশে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভের কারণে আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। কী হয় কী হয় এমনই অস্থির অবস্থা কেটেছে রবিবার। কোনওরকম যোগাযোগ করে স্বস্তি পেয়েছি। তবে স্বস্তি থাকল কই! সকালে যখন জানালা দিয়ে পারস্য উপসাগর দেখছি তখনই মোবাইলে ঢুকল কাতার সরকারের সতর্কতা দোহা থেকে পশ্চিম এশিয়া, ইউরোপ-আমেরিকার আন্তর্জাতিক উড়ানগুলি আপাতত স্থগিত অথবা ঘুরপথে চলাচল করবে। তারপরই আলজাজিরা, বিবিসি’র ব্রেকিং যে কোনও মুহূর্তে ইজরায়েলের বিমান হানার সম্ভাবনা লেবাননে। পারস্য উপসাগরের সুনীল জলরাশির উপর ফের যুদ্ধের কালো মেঘ ঘনিয়ে এল।

Kolkata 24×7 এর মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ সংবাদদাতা সুজানা ইব্রাহিম মোহনা। তিনি বিশ্ব রাজনৈতিক উত্থান পতনের অন্যতম কেন্দ্র কাতারের রাজধানী দোহা শহরে থাকেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর রিপোটার্জ পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তুলে ধরেন।

   

ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্বের কারণে বারবার রক্তাক্ত মুহূর্ত দেখেছে দুনিয়া। গতবছর (২০২৩) ৭ অক্টোবর যেভাবে ফিলিস্তিন সংগঠন হামাস সরাসরি ইজরায়েলের সুকঠিন নিরাপত্তা বলয় ভেঙে গণহত্যা চালিয়েছিল তার প্রত্যাঘাতে ইজরায়েলি বাহিনীও গাজা ভূখণ্ডের নিরাপরাধ ফিলিস্তিনিদের গণহত্যায় অভিযুক্ত। হামাস সংগঠনের বন্ধু লেবাননের সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এই সংগঠনটির রকেট হামলায় ইজরায়েলের গোলান হাইট এলাকা রক্তাক্ত। শিশুরা নিহত। এবার বদলা নিতে তৈরি ইজরায়েল।

একটু আগেই কাতার সরকারের সতর্ক বার্তা পেলাম। যে কোনও মুহূর্তে ইজরায়েলেন বিমান হানা হবে পড়শি দেশ লেবাননের মটিতে। সে দেশে থাকা হিজবুল্লাহ জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিতে আক্রমণের সিদ্ধান্ত সিলমোহর দিয়েছে ইজরায়েলি মন্ত্রিসভা। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী তৈরি তাদের মিসাইল নিয়ে। এই সংঘর্ষের আবহে লেবাননও যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে। সবমিলে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে মিসাইল গর্জনের প্রবল সম্ভাবনা।

বারবার মধ্যপ্রাচ্য সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ছোট্ট দেশ কাতার। এবারও কাতারি আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তেমনই কোনও উদ্যোগ নিতে পারেন বলেই আমার মনে হচ্ছে। কারণ, ইজরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে রকেট যুদ্ধ শুরু হলে আকাশপথে বিশ্বজোড়া যাতায়াত স্তম্ভ হয়ে যাবে। তেমনই সমুদ্রপথে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ও শেয়ার বাজারে নামবে ধস।

হামাস ও হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সমর্থক ইরান সরকার। আর ইজরা়য়েল ও ইরানের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক যে কেমন তা বিলক্ষণ জানে বিশ্ব। এই উত্তেজক কূটনৈতিক সমীকরণের প্রভাব পড়তে চলেছে চলমান প্যারিস অলিম্পিক আসরেও। কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল আসরে ঘুরে এরকমই গরম হাওয়ার খবর লিখেছিলাম। এবার কী হবে? উপসাগরের হাওয়া কিন্তু ফের গরম হচ্ছে।