ছয় ইরানি সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা ইসরায়েলের, ধ্বংস ১৫ যুদ্ধবিমান-হেলিকপ্টার

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ লাগাতার চড়ছে। ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে আমেরিকার হামলায় অভাবনীয় ক্ষয়ক্ষতির কয়েক ঘণ্টার মাথায়, ফের আঙাত হানল ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) দাবি করেছে, তারা ইরানের ছ’টি সামরিক বিমানঘাঁটিতে সরাসরি হামলা চালিয়ে ১৫টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ধ্বংস করেছে।

Advertisements

ছয় ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ, ধ্বংস F-14, F-5 ও AH-1

IDF-র এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইরানের পশ্চিম, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের ছয়টি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে ইরানের বায়ুসেনার গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধবিমান F-14, F-5 এবং যুদ্ধ হেলিকপ্টার AH-1।

ইসরায়েল জানিয়েছে, “এই বিমানগুলি আমাদের আকাশসীমায় হামলা চালাতে প্রস্তুত ছিল। তাদের আগে ধ্বংস করা আমাদের কৌশলগত সাফল্য।” সঙ্গে ধ্বংস করা হয়েছে একাধিক রানওয়ে, সামরিক অস্ত্রভাণ্ডার ও গোপন আন্ডারগ্রাউন্ড কমপ্লেক্স।

ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা, কেরমানশাহে বড় ধ্বংস israel airstrikes iran

IDF আরও দাবি করেছে, ইরানের কেরমানশাহ অঞ্চলে স্থল-থেকে-স্থলে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের একাধিক লঞ্চ প্যাড ও স্টোরেজ ইউনিট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। IDF জানিয়েছে, “এই ঘাঁটিগুলি থেকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল। আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পাল্টা আঘাত হেনেছি৷’’

আমেরিকার আগ্রাসনে পরমাণু ঘাঁটিতে ‘মাটির নিচে বিস্ফোরণ’ israel airstrikes iran

এই হামলার ২৪ ঘণ্টা আগেই, ইরানের তিনটি পরমাণু ঘাঁটিতে বিমান হানা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলাকে ব্যাখ্যা করেছেন ‘Bullseye Strike’ হিসেবে। তাঁর দাবি,

“ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আমরা এমন ক্ষতি করেছি যা ‘মাটির অনেক নীচে’ পৌঁছেছে। এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।”

Advertisements

ইরানের প্রতিক্রিয়া: ‘চূড়ান্ত প্রতিশোধ আসছে’

ইরান এই সম্মিলিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ করেছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “আমেরিকা ও ইসরায়েল এই হামলার মূল্য চোকাবে। শত্রুরা একটিও ভুলে না যাক— আমাদের প্রতিশোধ হবে নির্মম, হিসেব কষে নেওয়া এবং সময়োপযোগী।”

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেন, “আমেরিকার এই পদক্ষেপ ১৯৭৯ সালের পর ইরানের ওপর সবচেয়ে বড় পশ্চিমা হামলা। আমরা চুপ থাকব না। ইতিহাস প্রত্যুত্তর মনে রাখবে।”

ভারতের উদ্বেগ, আন্তর্জাতিক মঞ্চে অশনি সংকেত

এই সংঘাত ঘিরে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত-সহ একাধিক দেশ। দিল্লি জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সমস্ত পক্ষকে সংযত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, “ইরান ও ইসরায়েলের দ্বিপাক্ষিক সংঘর্ষ এখন এক বৃহৎ আন্তর্জাতিক লড়াইয়ে রূপ নিচ্ছে, যেখানে আমেরিকার সরাসরি অংশগ্রহণ নতুন মাত্রা যোগ করেছে।” বিশ্বজুড়ে তেল সরবরাহ, শেয়ারবাজার ও ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এখন মারাত্মক অনিশ্চয়তার মুখে।