মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং গুপ্তহত্যার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাচার করার অভিযোগে তিনজন ব্যক্তিকে ফাঁসি দিল ইরান। দেশের বিচার বিভাগের অধীনস্থ সংবাদ সংস্থা ‘মিজান’ জানিয়েছে, এই তিন অভিযুক্তকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন ১২ দিনব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর মার্কিন মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
মোসাদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ
মিজান জানিয়েছে, এই তিনজনকে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তারা এমন একটি হত্যা পরিকল্পনায় সহযোগিতা করেছিল, যার টার্গেট ছিলেন একজন অজ্ঞাত পরিচিত ব্যক্তি। যদিও সেই ব্যক্তি বা হত্যার প্রকৃত বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।
ইতিমধ্যে, ইরানে মোসাদের সঙ্গে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে প্রায় ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ‘নুরনিউজ’।
চরম উত্তেজনা ইরানে Iran Mossad executions
গত কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে ইরান। সাম্প্রতিক সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনা-ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান-এ বিমান হামলা চালায়। এরপরই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে, কিন্তু সেই চুক্তি কতটা কার্যকর হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে একে অপরকে দোষারোপ করেছে তেহরান ও তেলআবিব। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প লেখেন, “ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করবে না। সব বিমান ঘরে ফিরে যাবে। তারা আকাশে ‘বন্ধুত্বসূচক হাত নেড়ে’ ফিরে আসবে। কেউ আহত হবে না, যুদ্ধবিরতি কার্যকর আছে।”
ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি
প্রসঙ্গত, এই সংঘাতের সূচনা হয় যখন ইসরায়েল অভিযোগ তোলে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। ইরান অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই মৃত্যুদণ্ড এবং একাধিক গ্রেপ্তারের ঘটনায় ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ নতুন মাত্রা নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, তার স্থায়িত্ব এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।