ওয়াশিংটন: আমেরিকায় ৭১ বছরের যৌন অপরাধীকে (Sex offender) খুন করলেন ২৯ বছরের এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক। খুনের পর সে জনায়, “একজন যৌন অপরাধীকে হত্যা করা বহুদিনের ইচ্ছা ছিল।” চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ড ঘটেছে ক্যালিফোর্নিয়ার (California) ফ্রিমন্টে। মৃতের নাম ডেভিড ব্রিমার বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলেই বরুন সুরেশ নামক ওই যুবককে আটক করে পুলিশ।
গ্রেফতার হলেও ওই ৭১ বছরের যৌন অপরাধীকে হত্যা করে “খুশি” বলে জানিয়েছেন বরুন সুরেশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সুরেশ ক্যালিফোর্নিয়ার মেগান’স ল ডেটাবেস ব্যবহার করে ডেভিড ব্রিমারকে শনাক্ত করেন। ১৯৯৫ সালে শিশু যৌন নির্যাতনের জন্য নয় বছর জেল খেটেছিলেন ব্রিমার। আক্রমণের আগে সুরেশ এবং ব্রিমারের কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল না, বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পরিকল্পনা করেই যৌন অপরাধীকে খুন!
ক্যালিফোর্নিয়ার মেগান’স ল ডেটাবেস ব্যবহার করে ডেভিড ব্রিমারের ঠিকানা আগেই শনাক্ত করে নিয়েছিলেন সুরেশ। হামলার দিন একজন সার্টিফাইড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CPA) হিসেবে পরিচয় দিয়ে দরজায় দরজায় ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করছিলেন তিনি। সিপিএ-এর পরিচয় যেন আসল মনে হয়, তাই সঙ্গে একটি নোটবুক, কলম ও কফিমগ রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু পকেটে রাখা ছিল ধারালো ছুরি।
বিভিন্ন দরজায় ঘুরে ডেভিডের বাড়ি পৌঁছতেই তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করেন সুরেশ। তারপর ডেভিডের সঙ্গে করমর্দন করে বলেন, “আমি জানতাম আমার কাছে সঠিক লোকের তথ্য আছে”। এই বলেই ছুরি নিয়ে ডেভিডের উপর চড়াও হন সুরেশ। প্রাণভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে একাধিক পথচলতি গাড়িকে থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেন ডেভিড। এরপর তাঁকে কার্যত তাড়া করে এক প্রতিবেশীর গ্যারাজের কাছে ধরে ফেলেন সুরেশ।
“অনুতাপ করো” বলেই ডেভিডের গলায় ছুরির কোপ বসান বরুন সুরেশ। জানা গিয়েছে, হামলার মাত্র ৪৫ মিনিট আগেই ডেভিডের তথ্যের স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন সুরেশ। হামলা ও খুনের পর পুলিশের হাত থেকে পালানোর কোনও পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তিনি বলেন, “বেশ মজার অভিজ্ঞতা ছিল”।
আলামেডা কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি অফিস তার বিরুদ্ধে খুন (Murder), আবাসিক চুরি এবং মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে। কর্তৃপক্ষ এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন। কোনও সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে এটি হুঁশিয়ারি নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা। বর্তমানে সুরেশকে হেফাজতে নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বরুণ সুরেশকে এর আগে ২০২১ সালে ফ্রিমন্টের হায়াত প্লেসে একটি সন্দেহজনক ব্যাগ রেখে যাওয়ার পরে ভুয়া বোমা হুমকি এবং চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারের পর পুলিশকে সুরেশ বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন হায়াত হোটেলের সিইও একজন শিশু যৌনকর্মীবহুদিন ধরে তাঁকে হত্যা করার ইচ্ছা ছিল এবং বেশ কিছুদিন ধরে সিইও-র খোঁজও করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন বরুন সুরেশ।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
