যুক্তরাজ্যের পথে, এবার মার্কিন ও ইইউ চুক্তিতেও MSME সুবিধা চাইছে ভারত

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, ভারতীয় আলোচকরা ভবিষ্যতের বাণিজ্য চুক্তিগুলিতে—বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে—ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে (MSME) অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের…

যুক্তরাজ্যের পথে, এবার মার্কিন ও ইইউ চুক্তিতেও MSME সুবিধা চাইছে ভারত

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, ভারতীয় আলোচকরা ভবিষ্যতের বাণিজ্য চুক্তিগুলিতে—বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে—ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে (MSME) অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিস্তৃত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তি (CETA)-তে যেভাবে MSME খাতকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে, সেটিই এখন মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার মতে, তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল সহযোগিতা এবং তথ্য ভাগাভাগি বৃদ্ধি করা যাতে এমএসএমই-দের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অংশগ্রহণের ক্ষমতা উন্নত করা যায়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ-এর সাথে বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা এখনও চলছে।

   

গত সপ্তাহে স্বাক্ষরিত ভারত-যুক্তরাজ্য CETA-তে এমএসএমই নিয়ে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় যুক্ত করা হয়, যার পক্ষে ভারত জোরালোভাবে যুক্তি দিয়েছিল। ওই চুক্তির অধীনে দুটি দেশেই MSME যোগাযোগ কেন্দ্র স্থাপন, নীতি, সার্টিফিকেশন ও বাজার সুযোগ সংক্রান্ত তথ্য ভাগাভাগি, এবং প্রদর্শনী ও ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা (B2B) ইভেন্টের মতো বাণিজ্য প্রচারমূলক কার্যক্রমের বিধান রাখা হয়েছে।

সরকারি ক্রয় ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় সরকারি দরপত্র আহ্বানে যুক্তরাজ্যের সরবরাহকারীরা নির্ধারিত সীমার ওপরে টেন্ডারে ‘শ্রেণী-II স্থানীয় সরবরাহকারী’ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। তবে ভারতীয় সরবরাহকারীরা, বিশেষত MSME-রা, ‘শ্রেণী-I স্থানীয় সরবরাহকারী’ হিসেবে অগ্রাধিকার বজায় রাখবে।

এক কর্মকর্তা মতে, “ভারত চলমান বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায় MSME-গুলির জন্য এই ধরনের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছে, কারণ আমাদের MSME-গুলিকে সুরক্ষা দেওয়া একটি অগ্রাধিকার।”

Advertisements

CETA-তে MSME-গুলিকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করে এমন অ-শুল্ক বাধা মোকাবেলার জন্য একটি ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ডেলয়েট ইন্ডিয়ার অর্থনীতিবিদ রুমকি মজুমদার জানান, “CETA-তে যেসব শ্রম-নিবিড় ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো টেক্সটাইল, পাদুকা, চামড়াজাত পণ্য, সামুদ্রিক পণ্য, খেলনা, ক্রীড়া সামগ্রী এবং রত্ন ও অলংকার। এই ক্ষেত্রগুলি কেবল শ্রম-নিবিড় নয় বরং MSME খাতেরও বিশাল অবদান রয়েছে।” তাঁর মতে, ২০২৪-২৫ সালে এই ক্ষেত্রগুলির রপ্তানি অংশ ছিল ২৪.৬%, যা ২০১৮-১৯ সালে ছিল ৩০.৪%।

তিনি আরোও বলেন, “যুক্তরাজ্যের বাজারে অবাধ প্রবেশাধিকার এই ক্ষেত্রগুলিকে একটি বড় ধাক্কা দেবে, যার ফলে কর্মসংস্থান এবং আয়ের পাশাপাশি গ্রামীণ ও আধা-শহুরে MSME খাতগুলিতে বহুমুখী প্রভাব পড়বে।”

CETA MSME সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, মান, স্থায়িত্ব এবং রপ্তানি প্রস্তুতির উপর কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থাপন এবং নারী-মালিকানাধীন এবং গ্রামীণ MSME-গুলিকে উন্নীত করার জন্য দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করে।