রাশিয়া থেকে ভারতের অব্যাহত তেল আমদানি নিয়ে ফের সরব হল ওয়াশিংটন। মার্কিন জ্বালানি সচিব ক্রিস রাইটের অভিযোগ, রুশ তেল কেনার ফলে পুতিনের যুদ্ধযন্ত্র আরও অর্থ পাচ্ছে, যা ইউক্রেনের মাটিতে নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও তাঁর দাবি, “আমরা ভারতকে শাস্তি দিতে চাই না, কিন্তু রুশ তেল আমদানি অব্যাহত রাখা মানেই হত্যাযজ্ঞে প্রত্যক্ষ অর্থসাহায্য।”
“সস্তার তেলের জন্যই রাশিয়ার কাছে ঝুঁকছে ভারত”
রাইটের বক্তব্য, “বিশ্বে অসংখ্য তেল রপ্তানিকারক দেশ আছে। ভারত রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল নয়, কিন্তু সস্তা বলেই রুশ তেল কিনছে। অন্য কেউ রুশ তেল কিনতে চায় না। বাধ্য হয়ে রাশিয়া তা ছাড়ে বিক্রি করছে।” তাঁর অভিযোগ, ভারত এই বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এমন এক নেতাকে অর্থ দিচ্ছে, “যিনি প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করছেন।”
জয়শঙ্করের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা India Russian Oil Conflict
ট্রাম্প প্রশাসনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের রাতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন রাইট। তিনি জানান, দ্বিপাক্ষিক জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসারে ইতিবাচক আলোচনা শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমরা চাই যুদ্ধের অবসান ঘটুক, পাশাপাশি ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও মজবুত হোক। জ্বালানি ও বাণিজ্যে দু’দেশের জন্যই বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।”
শুল্ক চাপিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বার্তা
তবে কূটনৈতিক আলোচনার আবহে কড়া পদক্ষেপও নিয়েছে ওয়াশিংটন। গত আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে। ফলে মোট শুল্কভার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। মূল কারণ, নয়াদিল্লি রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে অস্বীকার করেছে।
নয়াদিল্লির পাল্টা জবাব
বিদেশ মন্ত্রক এই সিদ্ধান্তকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের কথায়, “আমেরিকা আমাদের রুশ তেল আমদানিকে নিশানা করছে। কিন্তু ভারতের জ্বালানি নীতি নির্ধারিত হয় বাজারের বাস্তবতা এবং ১৪০ কোটি মানুষের কাছে সাশ্রয়ী শক্তি পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতা থেকে।”
ফলে একদিকে ওয়াশিংটনের চাপ ও শুল্ক-অবরোধ, অন্যদিকে নয়াদিল্লির অটল অবস্থান—রুশ তেলের প্রশ্নে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক যে আরও এক দফা টানাপোড়েনের মুখে পড়েছে, তা স্পষ্ট।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
