দ্বীপদেশ মালদ্বীপ ও চিনের মধ্যে বন্ধুত্বে জল ঢালতে বিপুল আর্থিক সুবিধা দিতে চলেছে ভারত। নয়াদিল্লি ও মালের মধ্যে যে কূটনৈতিক বৈরিতা তৈরি হয়েছিল তাতে ভারত মহাসাগরে ঝুঁকির মুখে পড়েছিল ভারত সরকার। মালদ্বীপ সফরে গিয়ে ফের কূটনৈতিক বন্ধুত্ব চাগিয়ে তোলার চেষ্টা করলেন মোদী।
ভারত এবং মালদ্বীপ তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৪ জুলাই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক উদযাপন করেছে। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং মালদ্বীপে মূল উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে সহায়তা করতে ৪,৮৫০ কোটি রুপি (৫৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যের একটি নতুন ঋণসুবিধা ঘোষণা করেন।
একটি যৌথ অনুষ্ঠানে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে বক্তব্য রাখার সময় মোদী বলেন, “এই বছর ভারত ও মালদ্বীপ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০ বছর উদযাপন করছে। তবে আমাদের সম্পর্কের শিকড় ইতিহাসের থেকেও পুরনো এবং সাগরের মতোই গভীর।” উভয় দেশের ঐতিহ্যবাহী নৌকাগুলোর ছবি সম্বলিত একটি স্মারক ডাকটিকিটও দুই নেতা উন্মোচন করেন, যা তাদের যৌথ সামুদ্রিক ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে।
মোদী বলেন, “এটি প্রতিফলিত করে যে আমরা শুধু প্রতিবেশী নই, বরং সহযাত্রীও।”
ভারতের ‘প্রতিবেশী অগ্রাধিকার’ নীতি
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, “ভারত হল মালদ্বীপের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। মালদ্বীপ ভারতের ‘প্রতিবেশী অগ্রাধিকার’ নীতি এবং ‘মহাসাগর’ দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। সংকট বা মহামারির সময় হোক, ভারত সর্বদা প্রথম সাড়া দানকারী হিসেবে মালদ্বীপের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা হোক বা কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার—ভারত সব সময় একসঙ্গে কাজ করেছে।”
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু মোদীর সফরের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, এটি মালদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবস এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০ বছর পূর্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আমি একসঙ্গে চারটি সমঝোতা স্মারক (MoU) এবং তিনটি চুক্তি সাক্ষর করার সম্মান অর্জন করেছি, যেগুলো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে হয়েছে। এর মধ্যে একটি হল ৫৬৫ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণসুবিধা, যা আমার সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে ব্যবহৃত হবে।”
এই ঘোষণাগুলো ভারত-মালদ্বীপের মধ্যে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতিকে পুনরায় জোর দেয়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী মোদী মালেতে পৌঁছালে তাকে ২১ তোপধ্বনির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক স্বাগত জানানো হয়।