ভারত ও চীনকে(India-China relationship) পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপনে কাজ করতে হবে বার্তা চীনের বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং ই। সোমবার ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রের সঙ্গে বৈঠককালে ওয়াং ই এই মন্তব্য করেছেন। পরবর্তীতে ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের উপ-বিদেশ মন্ত্রী সান উইডং। এটি ছিল ভারত-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে চলমান একাধিক আলোচনার অংশ। যা ২০২০ সালের পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমিত করতে নতুন একটি দিশা দিয়েছে।
ওয়াং ই বলেছেন ভারত ও চীন উভয় দেশের মধ্যে বোঝাপড়া প্রতিষ্ঠার জন্য একে অপরকে ‘অর্ধেক পথে’ আসতে হবে এবং পারস্পরিক সমঝোতা এবং সমর্থন নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেছেন,‘‘পারস্পরিক সন্দেহ এবং পরস্পরের প্রতি বিচ্ছিন্নতা থেকে বিরত থাকতে হবে।” চীনের বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে এই বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে।
ওয়াং ই আরও বলেন, ‘‘চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নতি এবং বিকাশ দুটি দেশের মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি গ্লোবাল সাউথ (উন্নয়নশীল দেশ) এর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক।’’
অক্টোবর মাসে ভারত ও চীন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে এক বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর পর থেকেই উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাশিয়ায় এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। এরপর থেকেই দুই দেশ একাধিক প্ল্যাটফর্মে সীমান্ত নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কাজ শুরু করেছে। এই সিরিজের সর্বশেষ বৈঠকটি ছিল বিক্রম মিশ্র ও ওয়াং ই’র মধ্যে, যা সীমান্তের উত্তেজনা কমাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারত ও চীনের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী একাধিক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। বিশেষ করে মাল্টিল্যাটারাল মিটিংয়ের উপস্থিতে। এছাড়া ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ডিসেম্বর মাসে বেইজিংয়ে গিয়ে সীমান্ত সমস্যার ওপর বিশেষ প্রতিনিধি বৈঠক করেন।
তবে চীন কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। যেমন ভিসা নিষেধাজ্ঞা শিথিল এবং ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করা। চীন বলছে সীমান্ত সমস্যা সম্পর্কের ‘উপযুক্ত স্থান’ দেওয়া উচিত এবং উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ওপর জোর দেওয়া উচিত।
বিশেষ প্রতিনিধি বৈঠকে দুই দেশ সীমান্তে সহযোগিতা এবং আদান-প্রদান পুনরায় শুরুর বিষয়ে একমত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কৈলাস মানস সরোভার যাত্রার পুনরায় শুরুর কথা। পাশাপাশি লাদাখ সেক্টরে উত্তেজনা কমাতে এবং আস্থার পুনর্স্থাপন করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপও আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।