কানাডায় কূটনীতিকদের জীবন সংশয়, দেশে ফেরার নির্দেশ দিল নয়াদিল্লি

উগ্র শিখ খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘জঙ্গি’ আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন ভারতীয় দূতাবাসের কূটনীতিকরা। কানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে এমন বার্তা দিল নয়াদিল্লি (India-Canada Relations)। সরকারের নির্দেশে কূটনীতিকরা…

India-Canada Relations

উগ্র শিখ খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘জঙ্গি’ আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন ভারতীয় দূতাবাসের কূটনীতিকরা। কানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে এমন বার্তা দিল নয়াদিল্লি (India-Canada Relations)। সরকারের নির্দেশে কূটনীতিকরা দেশে ফিরছেন। সাম্প্পতিক সময়ে সর্বাধিক তলানিতে ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চলছে বলে কূটনৈতিক মহল সরগরম।

ভারতে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বিদেশমন্ত্রক। বৈঠকে তাঁকে সরাসরি জানানো হয়, কানাডায় “চরমপন্থা পরিবেশ” ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে।

   

বিদেশ মন্ত্রক জানায়, চরমপন্থা পরিবেশে, ট্রুডো সরকারের পদক্ষেপ তাদের (ভারতীয় কূটনীতিক) নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলেছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান কানাডিয়ান সরকারের প্রতিশ্রুতিতে আমাদের কোনো বিশ্বাস নেই। তাই, ভারত সরকার হাই কমিশনারকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে

ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সংঘাতের কেন্দ্রে ভারত বিরোধী খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদ। অভিযোগ, পাকিস্তান মদতপুষ্ট খালিস্তানি জঙ্গিরা কানাডায় প্রবল সক্রিয়। গতবছর (২০২৩) কানাডায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর। এই খুনের পিছনে ভারত জড়িত বলে দাবি করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডা থেকে খালিস্তানি নেতারা ভারত বিরোধী হুঙ্কার দিতে থাকে। হয় বিপুল জমায়েত।

রবিবার (১৩ আগস্ট) কানাডা সরকার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় কুমার ভার্মাকে ‘সন্দেহভাজন’ বলে ঘোষণা করেছে। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের ঘটনায় এমন পদক্ষেপ নিল কানাডা। বিবিসির খবর, কানাডা সরকার ‘পার্সন অব ইন্টারেস্ট’ শব্দটি ব্যবহার করেছে। কোনও ঘটনার তদন্তে ‘পার্সন অব ইন্টারেস্ট’ তাদেরই বলা হয় যাদের তদন্তকারীরা ওই ঘটনায় জড়িত বলে মনে করেন কিন্তু তখনও যাদের গ্রেফতার করা হয়নি।

এরপর বিদেশ মন্ত্রক সোমবার কানাডিয়ান চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সকে (রাষ্ট্রদূত) তলব করে জানান, খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজার হত্যার তদন্তের ক্ষেত্রে ভারতীয় হাইকমিশনার, কূটনীতিক এবং কর্মকর্তাদের ভিত্তিহীন লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং কর্ম সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।

কানাডার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের সময় ভারতের তরফে উল্লেখ করা হয়েছিল যে “চরমপন্থা পরিবেশ” কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে।

কানাডার দূতাবাস সূত্রে খবর, কানাডিয়ান শিখ নেতা নিজ্জর হত্যার পিছনে কে বা কারা জড়িত সেই প্রমাণ ভারত সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। যদিও ভারতের দাবি, অসংখ্য অনুরোধ সত্ত্বেও নিজ্জর হত্যায় ভারতের কথিত জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ দিতে ব্যর্থ কানাডা সরকার।

ভারতের কটাক্ষ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিতে জড়িত। বিবিসি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর, কানাডায় বিপুল সংখ্যক শিখ কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করেন। তাদের ভোট সে দেশের সব রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য।