যে দেশ গণধর্ষণ অনুমোদন করেছিল.. রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল ভারত

রাষ্ট্রসংঘ: রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইতিহাসের নির্মম সত্য তুলে ধরল ভারত। নারী অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় যখন পাকিস্তান কাশ্মীরি নারীদের ‘দুর্দশা’র কথা…

India blasts Pakistan at United Nations

রাষ্ট্রসংঘ: রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইতিহাসের নির্মম সত্য তুলে ধরল ভারত। নারী অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় যখন পাকিস্তান কাশ্মীরি নারীদের ‘দুর্দশা’র কথা বলে প্রচারযুদ্ধ চালানোর চেষ্টা করছিল, তখন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পর্বথনেনি হরিশ তার জবাবে দিলেন এক কঠোর, নৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রতিবাদ।

Advertisements

“যে দেশ নিজের জনগণের উপর বোমা ফেলে, সংগঠিত গণহত্যা চালায়, তারা নারী অধিকার বা মানবাধিকারের ভাষ্য রচনা করতে পারে না,”—রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন হরিশ। তাঁর বক্তব্যে প্রতিফলিত হয় শুধু কূটনৈতিক দৃঢ়তা নয়, বরং এক ঐতিহাসিক দায়বোধও।

   

‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নৃশংসতা স্মরণ করাল নয়াদিল্লি

ভারতের প্রতিনিধি স্পষ্ট ভাষায় স্মরণ করান ১৯৭১ সালের সেই ভয়ঙ্কর অধ্যায়—অপারেশন সার্চলাইট। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ‘বংলার কসাই’ নামে পরিচিত জেনারেল টিক্কা খান-এর নেতৃত্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চালানো হয় এক অমানবিক অভিযানের, যেখানে প্রায় চার লক্ষ নারীকে সংগঠিতভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়, নিহত হয় লক্ষ লক্ষ বাঙালি।

হরিশ বলেন, “যে দেশ ১৯৭১ সালে নিজের নাগরিকদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও গণহত্যা চালিয়েছে, তারা আজও সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত নয়। বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের প্রচারযন্ত্র আজ অর্থহীন হয়ে পড়েছে।”

রাষ্ট্রসংঘের সেই মঞ্চে ভারতের এই বক্তব্য কেবল পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ভণ্ডুল করেই দেয়নি, বরং ১৯৭১-এর রক্তাক্ত ইতিহাসকে নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিধ্বনিত করেছে—যেখানে পাকিস্তানের বর্বরতা ও বাংলাদেশের জন্মগাথা অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে।

কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের অভিযোগ ভেস্তে দিল ভারত India blasts Pakistan at United Nations

পাকিস্তানের প্রতিনিধি সাইমা সলিম দাবি করেছিলেন, কাশ্মীরে নাকি “যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে যৌন সহিংসতা” চলছে। কিন্তু ভারত সেই অভিযোগকে ‘অমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেয়। নয়াদিল্লির পালটা সাফ—প্রমাণহীন এই অভিযোগের আড়ালে পাকিস্তান নিজের ঘরে নারী নির্যাতন, ধর্মীয় নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের বাস্তবতাকে আড়াল করতে চায়।

নৈতিকতার ভাষায় কূটনীতির বার্তা

হরিশের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় এক নৈতিক দৃঢ়তা, “যে দেশ নিজের ইতিহাসের পাপ মুছতে পারেনি, যে দেশ আজও নিজের নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তাদের কাছ থেকে মানবতার পাঠ গ্রহণ করা যায় না।”

রাষ্ট্রসংঘের সেই সভাকক্ষে ভারতের বক্তব্য যেন ইতিহাসের এক গম্ভীর প্রতিধ্বনি—১৯৭১-এর ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে আসা মানবতার সেই কণ্ঠস্বর, যা আজও দক্ষিণ এশিয়ার নৈতিক মানচিত্রে পাকিস্তানের দায়কে স্মরণ করিয়ে দেয়।