পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষণার পথে ইমরান খানের ‘তেহরিক-ই-ইনসাফ’! বড় ঘোষণা শেহবাজের মন্ত্রীর

মাথা ব্যথা বাড়ল ইমরান খানের (Imran Khan)। পাকিস্তানে শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার জেলবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই (Pakistan Tehreek-e-Insaf) দলকে নিষিদ্ধ…

Imran Khan Nobel Peace Prize

মাথা ব্যথা বাড়ল ইমরান খানের (Imran Khan)। পাকিস্তানে শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার জেলবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই (Pakistan Tehreek-e-Insaf) দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার পাক তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এই ঘোষণা করেছেন। রাষ্ট্র বিরোধী কাজের অভিযোগ তোলা হয়েছে ইমরানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিরুদ্ধে। পিটিআই পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল। পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সরকার মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে পাঠাবে।

পাক মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, ‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ফেডারেল সরকার, পিটিআই-কে (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) নিষিদ্ধ করার জন্য একটি মামলা করবে সুপ্রিম কোর্টে।’ ইমরানের দলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অকাট্য প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি শেহবাজ শরিফের মন্ত্রীর। মন্ত্রীর কতায়, ‘নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে বিদেশি অনুদান পাওয়া, ৯ মে হিংসায় সরাসরি জড়িত থাকা, রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস বা সাইফার মামলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে তাতে ইমরান খানের দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত।’

পিটিআই’য়ের মুখপাত্র রওফ হাসান সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন যে, ‘পিটিআই আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টাকে সহ্য করবে না। কোর্টে সরকার মামলা করলে আমরা লড়াই করব।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার পাক সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত খারিজ করেছিল। জানিয়েছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের পিটিআই দলগত ভাবেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য। ওই মামলায় সে দেশের নির্বাচন কমিশনে যুক্তি ছিল যে, আনুপাতিক ভোটের হার অনুযায়ী শুধুমাত্র স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিরই মহিলা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ৭০টি আসন প্রাপ্য। পিটিআইয়ের স্বীকৃতি বাতিল হওয়ায় তাদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পাওয়া উচিত নয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ১৩ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ কমিশনের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল।

যুদ্ধে আর্থিক বিপর্যয়, ৪৬ হজার ইজরায়েলি কোম্পানি বন্ধ

Advertisements

৭১ বছরের ইমরান খান ১৯৯৬ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গঠন করেছিলেন। বিভিন্ন ইস্যুতে গণআন্দোলনের মাধ্যমে ২০১৮ সালে পড়শি দেশে ক্ষমতায় আসে ইমরানের দল। ২০১৮ থেরে ২২ সাল পর্যন্ত পাক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সে দেশের প্রাক্তন ‘কাপ্তান’। সেনা অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে কুর্সি থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। যা পাকিস্তানের রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দুর্নীতির অভিযোগে সে দেশের গত ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল পিটিাই-কে। তবুও আটকানো যায়নি ইমরানের দলকে। ওই দলের প্রার্থীরা নির্দল হয়ে অন্যান্য দলের তুলনায় বেশি আসন পেয়েছিলেন। ৮৪টি আসনে জিতেছিলেন তারা। অন্যদিকে পিএমএলএন ১০৮ এবং পিপিপি ২১টি আসন জেতে। ফলে ইমরানকে ঠেকাতে এই দুই দল জোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পিটিআই দলীয় মর্যাদা ফিরে পেয়ে ২৩টি সংরক্ষিত আসনের দখল পেলে সংখ্যার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দল পিএমএলএনের সঙ্গে ব্যবধান কমবে ইমরানের দলের। শাসক জোটের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাও থাকবে না। সে কারণেই নিষেধাজ্ঞা জারির মরিয়া পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।