নয়াদিল্লি, ২০ সেপ্টেম্বর : ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় আমেরিকার এইচ১-বি ভিসা (India Foreign Ministry) নীতির সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পূর্ণ প্রভাব বোঝার জন্য বিশ্লেষণ চলছে। ভারতীয় শিল্প জগতও প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যাতে এইচ১-বি ভিসা সংক্রান্ত কিছু বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে। এই ভিসা প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং অন্যান্য বিশেষায়িত ক্ষেত্রে দক্ষ ভারতীয় পেশাদারদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ দেয়, এবং এর যেকোনো পরিবর্তন ভারতীয় শ্রমশক্তি ও শিল্পের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিদেশ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ভারত ও আমেরিকা উভয় দেশের শিল্পের স্বার্থ উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতার মধ্যে নিহিত। আমরা আশা করি, ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক পরামর্শ হবে।” মন্ত্রণালয় আরও জোর দিয়ে বলেছে যে, দক্ষ পেশাদারদের আসা যাওয়া এবং পারস্পরিক সহযোগিতা ভারত ও আমেরিকার প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রতিযোগিতা এবং উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নীতি নির্ধারকরা এই সিদ্ধান্তের পর্যালোচনা করার সময় দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধা এবং দৃঢ় সম্পর্কের কথা বিবেচনা করবেন বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে যে, এইচ১-বি ভিসা নীতির পরিবর্তন পরিবারগুলির জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, ভারতীয় পেশাদাররা যারা এই ভিসার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের (এইচ৪ ভিসাধারীদের) কাজের অনুমতি এবং বসবাসের অধিকারের উপর প্রভাব পড়তে পারে।
বিদেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, “এই পদক্ষেপ পরিবারগুলির জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। আমরা আশা করি, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার যথাযথ সমাধান করবে।” ভারত সরকার এই বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছে। ভারতীয় শিল্প সংগঠনগুলি, বিশেষ করে ন্যাসকম (ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিসেস কোম্পানিজ), এই নীতির সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ন্যাসকম জানিয়েছে, এইচ১-বি ভিসা ভারতীয় আইটি শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মার্কিন বাজারে ভারতীয় কোম্পানিগুলির প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা বজায় রাখে। ২০২৪ সালে প্রায় ৭০ শতাংশ এইচ১-বি ভিসা ভারতীয় পেশাদাররা পেয়েছেন, যা ভারতীয় আইটি শিল্পের জন্য এর গুরুত্ব তুলে ধরে। এই নীতির পরিবর্তন ভারতীয় কোম্পানিগুলির খরচ বাড়াতে এবং তাদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
দক্ষিণ রেলে চাকরির সুযোগ! এই প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন; শেষ তারিখ জেনে নিন
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একজন নেটিজেন লিখেছেন, “এইচ১-বি ভিসা নীতির পরিবর্তন ভারতীয় পেশাদারদের জন্য বড় ধাক্কা। আমেরিকার উচিত দ্বিপাক্ষিক সুবিধা বিবেচনা করা।” আরেকজন লিখেছেন, “ভারত-মার্কিন সম্পর্ক শক্তিশালী, এই ইস্যুতে সমাধান হবে।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নীতি পরিবর্তন মার্কিন অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ ভারতীয় পেশাদাররা মার্কিন প্রযুক্তি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।