চিকিৎসকদের ছাড়? নতুন এইচ-১বি ফি নিয়ে হোয়াইট হাউসের ইঙ্গিত

ওয়াশিংটন: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় একলাফে ১ লক্ষ মার্কিন ডলার ফি বসানো হয়েছে নতুন এইচ-১বি ভিসার ওপর। এতে ভারতীয় আইটি খাত থেকে শুরু করে মার্কিন…

H-1B Visa Exemption for Doctors

ওয়াশিংটন: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় একলাফে ১ লক্ষ মার্কিন ডলার ফি বসানো হয়েছে নতুন এইচ-১বি ভিসার ওপর। এতে ভারতীয় আইটি খাত থেকে শুরু করে মার্কিন স্বাস্থ্যব্যবস্থা পর্যন্ত সর্বত্র ছড়িয়েছে আতঙ্ক। তবে তীব্র সমালোচনার মুখে সোমবার হোয়াইট হাউস জানাল, চিকিৎসক ও মেডিক্যাল রেসিডেন্টরা এই নিয়মে ছাড় পেতে পারেন। ব্লুমবার্গকে মুখপাত্র টেলর রজার্স বলেন, “প্রোক্লেমেশনে ছাড়ের সুযোগ রাখা হয়েছে, যেখানে চিকিৎসক ও রেসিডেন্টদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।”

স্বাস্থ্যখাতে শঙ্কা

হঠাৎ ফি বাড়ানোর ফলে হাসপাতাল ও চিকিৎসক সংগঠনগুলি সরব হয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, এই খরচ যোগ হলে কর্মী ঘাটতি প্রকট হবে। আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ববি মুক্কামালা সতর্ক করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক স্নাতক চিকিৎসকরাই মার্কিন স্বাস্থ্যব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে গ্রামীণ ও অবহেলিত অঞ্চলে তাঁদের ভূমিকা অপরিহার্য। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে প্রায় ৭৬ মিলিয়ন আমেরিকান প্রাথমিক চিকিৎসকের অভাবে ভুগছেন।

   

বড় হাসপাতালগুলির মাথাব্যথা H-1B Visa Exemption for Doctors

মায়ো ক্লিনিক, ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক বা সেন্ট জুডের মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এইচ-১বি ভিসার বড় স্পনসর। মায়োরই অনুমোদিত ভিসার সংখ্যা ৩০০-র বেশি। প্রতিটি আবেদনেই যদি ১ লক্ষ ডলার দিতে হয়, তবে খরচ কয়েক মিলিয়নে পৌঁছে যাবে— যা বড় চাপ তৈরি করবে হাসপাতালগুলির ওপর।

ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি

ট্রাম্পের ভাষায়, এই নীতি ‘অসাধারণ দক্ষ’ কর্মীদের জন্য সুযোগ রাখবে। বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিকের দাবি, এতদিন ভিসা নীতি গড়ের নিচে আয় করা বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশের পথ খুলে রেখেছিল, যারা প্রায়ই সরকারিভাবে সাহায্যনির্ভর হয়ে পড়ত। নতুন ফি ব্যবস্থা সেই ‘নিচের স্তরের’ আবেদনকারীদের বাদ দেবে, পাশাপাশি সরকারি কোষাগারে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনবে। ট্রাম্পের মতে, এই অর্থ জাতীয় ঋণ কমাতে ও কর হ্রাসে ব্যবহার হবে।

Advertisements

ভারতীয় আইটি খাতের দুশ্চিন্তা

সবচেয়ে বেশি আঘাত এসেছে ভারতের দিকে। গত বছর অনুমোদিত এইচ-১বি ভিসার ৭১ শতাংশই ভারতীয়দের দখলে ছিল। ইনফোসিস, টিসিএস, উইপ্রো, কগনিজ্যান্টের মতো সংস্থাগুলি মার্কিন প্রকল্পে কর্মী পাঠাতে বহু বছর ধরে এই ভিসার ওপর নির্ভর করে আসছে। তিন বছরের মেয়াদি ও নবায়নযোগ্য ভিসার জন্য ১ লক্ষ ডলার খরচ করলে ব্যয়ভার আকাশছোঁয়া হবে। ফলে সুযোগ কমে যেতে পারে ভারতীয় পেশাজীবীদের, যা দীর্ঘমেয়াদে ভারতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকেও প্রভাবিত করবে।

বাজারে সাড়া

ঘোষণার পর মার্কিন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ভারতীয় আইটি সংস্থার শেয়ার ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়। সমালোচকদের মতে, নীতি বিশ্বব্যাপী মেধা চলাচল ব্যাহত করবে এবং উদ্ভাবনের গতি কমিয়ে দেবে। তবে সমর্থকদের বক্তব্য, এতে মার্কিন তরুণদের জন্য চাকরির সুযোগ বাড়বে এবং মজুরি স্থিতিশীল থাকবে।

ছাড়ের আশা

তবে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করেছে, জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে ছাড় দেওয়া যাবে। চিকিৎসক ও মেডিক্যাল রেসিডেন্টদের সেই তালিকায় রাখা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসক ঘাটতির বাস্তবতা বিবেচনায়, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যতিক্রমের সম্ভাবনাই এখন প্রবল।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News