জর্ডানে ইজরায়েলি দূতাবাসের কাছে বন্দুকধারীর গুলি, তিন পুলিশ আহত

জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ইজরায়েলি (Israeli) দূতাবাসের কাছে রবিবার সকালে এক বন্দুকধারী গুলি চালালে তিন পুলিশকর্মী আহত হন এবং পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বন্দুকধারীকে হত্যা করে।…

Gunman Killed in Shooting Near Israeli Embassy in Jordan

জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ইজরায়েলি (Israeli) দূতাবাসের কাছে রবিবার সকালে এক বন্দুকধারী গুলি চালালে তিন পুলিশকর্মী আহত হন এবং পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বন্দুকধারীকে হত্যা করে। সরকারি সংবাদ সংস্থা পেট্রা জানিয়েছে, হামলার পর বন্দুকধারী পালানোর চেষ্টা করলে তাকে নিকটবর্তী এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা রবীহা এলাকায় ঘটে, যেখানে প্রায়শই ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।

হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিক্রিয়া
জর্ডানের পাবলিক সিকিউরিটি ডিরেক্টরেট (পিএসডি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে হামলাকারীকে নাশকতা এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে দ্রুতভাবে প্রতিরোধ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের কাছে পূর্বে মাদক সম্পর্কিত অপরাধের রেকর্ড ছিল। এই হামলার পর, জর্ডানের সরকারী মন্ত্রীর বক্তব্যে বলা হয়েছে, “জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য একটি অগ্রহণযোগ্য লালরেখা।” মন্ত্রীর বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে যে, দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করা হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

   

এটা কীভাবে ঘটল?
রবীহা এলাকার গুলির ঘটনা ঘটার সময়, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন। বন্দুকধারী একাধিক গুলি চালায় এবং তার পরে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ বাহিনী তাকে দ্রুত গতিতে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয় এবং তাকে গুলি করে হত্যা করে। আহত পুলিশ সদস্যদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসকদের মতে, তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

জর্ডানের প্রতিক্রিয়া ও মন্ত্রীর বিবৃতি
এই হামলার জন্য জর্ডান সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সরকারী যোগাযোগ মন্ত্রী মোহাম্মদ মোমানি বলেছেন, “এই ধরনের হামলা জাতীয় নিরাপত্তা এবং শান্তির প্রতি এক তীব্র আক্রমণ।” তিনি আরও বলেন, “যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আক্রমণ কঠোরভাবে দমন করা হবে এবং যারা এই ধরনের কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইজরায়েলি বিরোধী মনোভাব এবং গাজার পরিস্থিতি
এই হামলার পেছনে মূল কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা জর্ডানে ইজরায়েলের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাবকে চিহ্নিত করেছেন। বিশেষত, গাজায় ইজরায়েলের হামলার পর থেকে দেশটিতে অস্থিরতা বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের দ্বারা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এক চরম আক্রমণের পর, জর্ডানে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়েছে।

রয়্যাল কোর্ট চীফের পরিদর্শন
এই ঘটনায় আহত পুলিশকর্মীদের দেখতে রবিবার রয়্যাল কোর্টের প্রধান ইউসেফ হাসান আল-ইসাওয়ি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তিনি আহত নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের চিকিৎসার অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়েছেন এবং তাদের দ্রুত সুস্থতার জন্য রাজার শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, আহতদের মধ্যে চারজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের চিকিৎসা চলছে এবং তারা সকলেই বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।

জর্ডানে ইজরায়েলি দূতাবাসের কাছে হামলার ঘটনা দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদের পরিচায়ক। এটি শুধু জর্ডানের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের জন্য একটি বড় সংকেত যে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী এই ধরনের হামলায় কঠোর প্রতিক্রিয়া জানালেও, আরও শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে অব্যাহতভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।