ঢাকা, ১২ অক্টোবর: বাংলাদেশের হৃদয়স্থলে অবস্থিত শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে (Communal Tension) ‘ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছে একাধিক মৌলবাদী সংগঠন। তারা দাবি করছে, এই জনপ্রিয় স্টেডিয়ামটি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের কাছাকাছি অবস্থিত। এই স্টেডিয়ামে ‘ধর্মবিরোধী কার্যকলাপ’ চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেছে তারা।
মৌলবাদীদের অভিযোগ স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ম্যাচের সময় গান-বাজনা, নাচ-গান এবং উল্লাসের আওয়াজ মসজিদের নামাজের সঙ্গে পরিপন্থী যা তাদের ভাষায় ‘জিনা’ ও ‘হারাম’—এমন অভিযোগ তুলে তারা স্টেডিয়ামটি অচিরকালের জন্য সরিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছে। এই ঘটনা দেশের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক সংঘাতকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
দুর্যোগে যাঁরা সাহায্য করেছেন, তাঁদের সম্মানিত করা হবে ঘোষণা মমতার
মৌলবাদীদের এই হুমকিতে ছড়িয়েছে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা যা সামাজিক মাধ্যম থেকে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে।শের-ই-বাংলা ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুরে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক মানের স্থাপনা করা হয় এখানে, যা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভবন।
এখানে আইপিএল-এর মতো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে শুরু করে দেশের প্রধান লিগ ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষ লক্ষ ফ্যান এখানে জড়ো হয়, ক্রিকেটের মাধ্যমে দেশের ঐক্য ও উন্মাদনা দেখে। কিন্তু এখন এই স্টেডিয়ামটি হয়ে উঠেছে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর দাবি, স্টেডিয়ামের অবস্থান বায়তুল মোকাররমের সান্নিধ্যে অসম্মানজনক।
যদিও দুটি স্থানের মধ্যে কয়েক কিলোমিটারের ব্যবধান রয়েছে, কিন্তু তারা বলছে, ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের উন্মাদনা মসজিদের শান্তি ভঙ্গ করে। তারা আরও বলেছে ‘এটি ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, স্টেডিয়ামটি সরিয়ে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে বা ভেঙে ফেলতে হবে’—এমন হুমকি দিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছে।
সাধারণ মানুষের মতে এই হুমকি দেশের ক্রীড়া-সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। তারা বলছে ক্রিকেট বাংলাদেশের জাতীয় আবেগের প্রতীক—শাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমানের মতো তারকাদের কারণে এটি যুবসমাজের অনুপ্রেরণা। বিসিবি অধ্যক্ষ নাজমুল হাসান পাশা বলেন, ‘এটি অসম্ভব। স্টেডিয়ামটি জাতীয় সম্পদ, ধর্মের নামে এর উপর হামলা দেশের ঐক্যকে বিপন্ন করবে।’
সরকারও সতর্কতা জারি করেছে, কিন্তু মৌলবাদীদের আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে। শনিবার বায়তুল মোকাররমের সামনে একটি সমাবেশ ডাকা হয়েছে, যেখানে হাজারো সমর্থক জড়ো হয়ে স্টেডিয়াম ভেঙে দেওয়ার স্লোগান দিয়েছে। পুলিশের উচ্চ সতর্কতায় শহরের যানজট বেড়েছে।