মেসিকে পারেননি, রাজনীতিতে মেরিনকে ঠেকিয়ে ফ্রান্সকে বাঁচাবেন এমবাপে?

ফ্রান্স মানে শুধু যে ফুটবলের দ্বৈরথ, তা কিন্তু নয়। ফরাসি রাজনীতির সাসপেন্স যে কোন ফুটবল ম্যাচের extra-টাইম বা পেনাল্টি শুট-আউটের টানটান উত্তেজনার সাথে রীতিমত পাল্লা…

ফ্রান্স মানে শুধু যে ফুটবলের দ্বৈরথ, তা কিন্তু নয়। ফরাসি রাজনীতির সাসপেন্স যে কোন ফুটবল ম্যাচের extra-টাইম বা পেনাল্টি শুট-আউটের টানটান উত্তেজনার সাথে রীতিমত পাল্লা দিয়ে দিতে পারে। আর সেই উত্তেজনার আঁচে নিজেকে বোধহয় ফুটবল মাঠের মধ্যেই আর সীমাবদ্ধ রাখতে পারলেন না প্রখ্যাত ফরাসি ফুটবলার এবং ফ্রান্সের জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন কিলিয়ান এমবাপে(France Kylian Mbappe)। এবার রাজনীতির আঙিনায় সরাসরি না হলেও যেভাবে তিনি প্রবেশ করলেন তাকে ওয়াইল্ড-কার্ড এন্ট্রিও বলা যায়।

ট্রাম্পের ভোলবদল! গ্রীন কার্ড দিতে অভিবাসীদের কী শর্ত?

   

ঘটনার সূত্রপাত জুন মাসে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সংসদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ম্যারিন লঁ পঁ-র ন্যাশনাল র‍্যালির কাছে অভাবনীয় হার হয় প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর দলের। সেই সময় সবাইকে অবাক করে দিয়ে সংসদ ভেঙে দিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন যে ৩০ শে জুন প্রথম দফায় নতুন করে ফরাসি সংসদ নির্বাচন হবে, দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে ৭ই জুলাই । এই নির্বাচনে বাম এবং মধ্যপন্থী দলগুলি জোট বেঁধেছে অতি দক্ষিণপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালির বিরুদ্ধে।

ফ্রান্সে এই মুহূর্তে হঠাৎ করেই এই অতি দক্ষিণপন্থী দল ন্যাশনাল র‍্যালির জয়জয়কার চলছে। এই চরমপন্থী দলের এহেন সমর্থন বৃদ্ধিতে রীতিমত সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ফ্রান্সের অনেক খেলোয়াড় থেকে শুরু করে অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং বিখ্যাত ব্যক্তিগণ। তাদের মধ্যে অনেকেই এবিষয়ে সরাসরি মুখ খুলছেন। বিখ্যাত ফরাসি ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপেও চুপ করে থাকেন নি। ফুটবলের ময়দানের পাশাপাশি রাজনীতির ময়দানেও তিনি তার বক্তব্য জোর গলায় তুলে ধরেছেন।

ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতায় জোর, এক ডজন সমঝোতা

এমবাপের(France Kylian Mbappe) পরিষ্কার বক্তব্য,”ফুটবলের আগেও দেশ বড়। আমরাই ফারাকটা গড়ে দিতে পারি। আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি যে, ওই উগ্রবাদী-মৌলবাদী দল ক্ষমতায় আসতে পারে। তাই আমি এই সময়ে যে কথাগুলো বলছি আশা করি সেগুলো যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে। আমাদের নিজেদেরও বুঝতে হবে, আমাদের যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা সহনশীলতার ঐতিহ্য রয়েছে, তাকে আমরা কোনমতেই ভুলে যেতে পারি না। আমার মনে হয় আমরা যেটা ভালো সেটাকেই বেছে নিতে পারব। ৭ই জুলাই আবারও জাতীয় দলের হয়ে জার্সি পড়ব। সেটাও আমার কাছে সমান গর্বের।”

যদিও যে দলকে কটাক্ষ করে এমবাপের এই বক্তব্য, তাদের পরিষ্কার বক্তব্য যে খেলাটাই মন দিয়ে খেলুন এমবাপে(France Kylian Mbappe)। রাজনীতিটা রাজনীতির লোকদেরই মানায়। এদিকে এখন অব্দি যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, ম্যারিন লঁ পঁ-র দল প্রথম দফায় প্রায় ৩৩ শতাংশ সমর্থন নিজেদের দখলে আনতে পেরেছে। যেখানে কিনা বামপন্থী দলগুলির জোট কিছুটা পিছিয়ে আছে তাদের থেকে। এই জোট এখন অব্দি ২৮ শতাংশ সমর্থন পেয়েছে বলে বিভিন্ন সমীক্ষক সংস্থা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। আগামি ৭ই জুলাই দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে এমবাপের বক্তব্য তাই আরও গুরুত্ব পাচ্ছে।

রুশ ভূখন্ডে এবার মার্কিন অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে পারে ইউক্রেন, ঘোষণা পেন্টাগনের

যদিও আসন্ন ইউরো কাপ শুরুর আগেই নাকে বেশ গুরুতর চোট পেয়েছিলেন এমবাপে। অনেকেই ভেবেছিলেন এ যাত্রায় ইউরো কাপ হয়তো খেলা হচ্ছে না ফরাসি ক্যাপ্টেনের। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে আবারও তিনি মাঠে ফিরে এসেছেন। ইউরো অভিযানের শেষে হয়ত নাকের সার্জারি করাতে পারেন কিলিয়ান। এর আগে ২০২২-এর বিশ্বকাপে রীতিমত নিজের একার পায়ে খেলা প্রায় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ তুর্কি। সে যাত্রায় প্রায় স্বপ্নভঙ্গ হয়েই যাচ্ছিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার।

কিন্তু এবার শুধু ফুটবলের মাঠে নয়, রাজনীতির মাঠেও খেলা ঘোরাতে চাইছেন এমবাপে। এবার দেখা দরকার, ফুটবলের মত রাজনীতিতেও কিলিয়ানের জাদু কতটা ‘কিলার’ হতে পারে। ম্যারিন লঁ পঁ-র অতি দক্ষিণপন্থী দল যদি এই নির্বাচনে পাল্টা গোল খেয়ে বসে, সে ক্ষেত্রে হয়ত ভোটের ম্যাচে সরাসরি না খেলেও গোলদাতা হিসেবে কিলিয়ানের নামটাও ভেসে উঠতে পারে।