১০০ করে থামল জীবন, প্রয়াত নোবেলজয়ী প্রাক্তণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার (Jimmy Carter) ১০০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান “দ্য কার্টার সেন্টার” এ খবর নিশ্চিত করেছে। পিনাট চাষী…

EX US President Jimmy Carter,US president, dies on Monday

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার (Jimmy Carter) ১০০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান “দ্য কার্টার সেন্টার” এ খবর নিশ্চিত করেছে।

পিনাট চাষী হিসেবে জীবন শুরু করা জিমি কার্টার ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘায়ু প্রেসিডেন্ট হিসেবে জীবনযাপন করেছেন। তিনি অক্টোবর মাসে তাঁর শততম জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। “দ্য কার্টার সেন্টার” জানিয়েছে, তিনি রবিবার দুপুরে জর্জিয়ার প্লেইনসে তাঁর বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। 

   

জেলে হঠাৎ সংজ্ঞাহীন ‘কাকু’! SSKM থেকে নিয়ে যাওয়া হবে বেসরকারি হাসপাতালে

কার্টার ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন, যা ছিল অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সংকটের সময়কাল। তাঁর প্রশাসন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে তেলের সংকট, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, এবং ইরানে মার্কিন কূটনৈতিক কর্মীদের বন্দী হওয়া।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর সময়কাল অস্বাভাবিকভাবে কঠিন ছিল, এবং তাঁর নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি একাধিক সমস্যায় জর্জরিত হয়েছিল। তাঁর বৈদেশিক নীতিতেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংকট ছিল, যার মধ্যে ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লব এবং তেহরানে আমেরিকান কূটনীতিকদের বন্দী করা অন্যতম। এসব কারণেই তাঁকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল এবং তাঁর অনুমোদন রেটিং অনেক কম ছিল। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পর, কার্টারের কর্মজীবনের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়।

ক্ষমতা ছাড়ার পর, জিমি কার্টার বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার, গণতন্ত্র, এবং শান্তির পক্ষে কাজ করতে শুরু করেন। ১৯৮২ সালে তিনি “দ্য কার্টার সেন্টার” প্রতিষ্ঠা করেন, যা বিশেষভাবে বিশ্বে গণতন্ত্রের উন্নয়ন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে। তাঁর এই প্রচেষ্টার জন্যই তিনি ২০০২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর মানবিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে আফ্রিকায় পোলিও নির্মূলের প্রচেষ্টা, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর কার্যক্রম, এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ।

কবে শহরে আসবেন ক্রেসপো? বিকল্প হিসেবে নজরে এই বিদেশি

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কার্টারের এই মানবিক অবদান তাঁকে শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নয়, বরং একজন বিশ্বনাগরিক হিসেবে খ্যাতি এনে দেয়। তিনি দেশে ও বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একাধিক দুঃসাহসিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং তার পরিণতি হিসেবে তাঁর অবদান ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।

তিনি জীবনের প্রায় সবটাই সাধারণ মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর অমোঘ চিন্তা-চেতনা, বিশ্বশান্তির জন্য সংগ্রাম, এবং নৈতিকতার প্রতি প্রতিশ্রুতি তাঁকে মানবতার এক মহান রূপকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শততম জন্মদিন উদযাপন করলেও, তিনি ছিলেন খুবই সাধারণ জীবনযাপনে বিশ্বাসী।