কাঠমান্ডুর বালুয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে জরুরি বৈঠক

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর (Kathmandu) বালুয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে একটি জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছে। এই বৈঠক ডাকা হয়েছে নিউ বানেশ্বরে সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভের পর, যেখানে একদিনে…

কাঠমান্ডুর বালুয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে জরুরি বৈঠক

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর (Kathmandu) বালুয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে একটি জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছে। এই বৈঠক ডাকা হয়েছে নিউ বানেশ্বরে সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভের পর, যেখানে একদিনে দশাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বে এই বৈঠক ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয়েছে।

বৈঠকের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ‘জেন জি’ নেতৃত্বাধীন সারা দেশব্যাপী বিক্ষোভ এবং সরকারের সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উত্থিত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা। এই বিক্ষোভগুলি কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য শহরে তীব্র আকার ধারণ করেছে, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠেছে।

   

নিউ বানেশ্বরে সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালায়, যার ফলে হাসপাতালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৪ জন নিহত হয়। এই ঘটনা নেপালের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিক্ষোভকারীরা, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি, সরকারের সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল।

এই নিষেধাজ্ঞাকে তারা বাক স্বাধীনতার উপর আঘাত হিসেবে দেখছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করেছে, যা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এই জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ, জনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

এছাড়াও, বৈঠকে সাম্প্রতিক জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলির পর্যালোচনা করা হবে। সরকারের উপর জনগণের ক্রমবর্ধমান চাপ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের সমালোচনার মধ্যে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি, সিনিয়র মন্ত্রীদের জড়িত একটি ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগও সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যা বৈঠকের আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত সংবেদনশীল। সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি তরুণদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পোস্টে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে “অগণতান্ত্রিক” হিসেবে আখ্যায়িত করছে।

Advertisements

এই পরিস্থিতিতে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা জনগণের মধ্যে আরও আক্রোশ সৃষ্টি করেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর, যা মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ওলি সম্ভবত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা, আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার কৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন।

বৈঠকে সামাজিক মাধ্যম নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনাও আলোচিত হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত জনগণের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস করেছে, এবং এই বৈঠক থেকে কংক্রিট পদক্ষেপ না নেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

সিঙ্গাপুরকে গোলের মালা দিয়ে ছেলেদের পর দাপট অব্যাহত রাখল মেয়েরা

এই বৈঠকের ফলাফল নেপালের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং সরকারের স্থিতিশীলতার উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। জনগণ এবং বিরোধী দলগুলি সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছে। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী ওলি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন, যেখানে তিনি পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য সরকারের পরিকল্পনা ঘোষণা করতে পারেন।